দিনদুপুরে সীমানা পেরিয়ে ঢুকে পড়েছিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশকর্মী ও কিছু এলাকাবাসীর তৎপরতায় তা ঠেকানো গিয়েছে। কিন্তু পরপর অপরাধ ঘটতে থাকা শিল্পাঞ্চলে সীমানা এলাকায় কড়া নজরদারির কতটা প্রয়োজন, সোমবার মাইথন লাগোয়া কালিপাথরের ঘটনা তা বুঝিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। সোমবারের অভিযানে থাকা কয়েক জন পুলিশকর্মীকে পুরস্কৃত করার পাশাপাশি সীমানায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা।
সোমবার দুপুরে মোটরবাইকে চ়়ড়ে মাইথন পেরিয়ে ঢোকার সময়ে সিদাবাড়ি মোড়ের কাছে তিন জনকে আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তারা মোটরবাইক না থামিয়ে পাশের মোরাম রাস্তা ধরে সিদাবাড়ির দিকে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ধাওয়া করলে ওই দুষ্কৃতীরা এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। বেশ কিছুটা এগিয়ে মোটরবাইক ফেলে রেখে কালিপাথর গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়ে ওই দুষ্কৃতীরা। পুলিশও জঙ্গলে ঢোকে। গুলির শব্দ শুনে সঙ্গী হন কিছু গ্রামবাসী। দু’জনকে ধরেও ফেলে পুলিশ। এক জন পালায়। ধৃতদের মধ্যে ছোটু সিংহ নামে এক জনের মৃত্যু হয়।
পলাতক দুষ্কৃতীর খোঁজ মেলেনি মঙ্গলবারও। পুলিশের দাবি, ধৃত মহম্মদ আখতারকে জেরা করে জানি গিয়েছে, সে নিজে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। অনেক দুষ্কৃতীকে আশ্রয়ও দেয় সে। পুলিশ কমিশনার জানান, তিন জনই ঝাড়খণ্ড ও বিহারের দুষ্কৃতী। সম্প্রতি রূপনারায়ণপুরে নানা অপরাধ ঘটেছে। এলাকার এক চাল ব্যবসায়ীর দোকানে লুঠে এরা জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। সালানপুরে আরও কিছু দুষ্কর্মের জন্যই তারা ঢোকার চেষ্টা করছিল বলে পুলিশের অনুমান। তবে পুলিশ তৈরি থাকায় তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে দাবি করে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘পুলিশ দুঃসাহসিক কাজ করেছে। অভিযানে থাকা কয়েক জন পুলিশকর্মীকে আমরা পুরস্কার দেওয়ার কথা ভেবেছি।’’
পুলিশ কমিশনার আরও জানান, সীমানায় আগেই স্থায়ী নাকাবন্দির ব্যবস্থা হয়েছে। সব গাড়ি ভাল ভাবে পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একাধিক ওয়াচ টাওয়ার বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। একাধিক স্পর্শকাতর এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছি যা গোপন রাখা হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমানার গ্রামগুলির বাসিন্দাদের কোনও অপরিচিত বা সন্দেহজনক লোকজনের গতিবিধি নজরে এলেই লাগোয়া থানা বা পুলিশ ফাঁড়িকে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।