চুরিতে নাবালকেরাও

বড়সড় মোবাইল চুরি চক্রের হদিশ পেল কুলটির নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দু’জনকে চিনাকুড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের কাছ থেকে নামী কোম্পানির প্রায় ৩০টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কুলটি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০০:৩০
Share:

এই দু’জনকে জেরা করেই মোবাইল চুরিতে নাবালকদের জড়িত থাকার বিষয়টি জানা গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। নিজস্ব চিত্র

বড়সড় মোবাইল চুরি চক্রের হদিশ পেল কুলটির নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দু’জনকে চিনাকুড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের কাছ থেকে নামী কোম্পানির প্রায় ৩০টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশ জানতে পেরেছে, মোবাইল ‘চুরি-বিদ্যা’য় টার্গেট থাকে নাবালকেরা। তাদের কী ভাবে এই কারবারে টানা হয়, কী ভাবেই চোরাই মোবাইলগুলি বাজারে পাঠানোর উপযোগী করা হয়, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য এসেছে বলে তদন্তকারীরা জানান।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসে যাওয়ার সময়ে সম্প্রতি জামুড়িয়ার দামোদরপুর এলাকার এক বাসিন্দার মোবাইল চুরি হয় কুলটি থেকে। তিনি নিয়ামতপুর পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে চিনাকুড়ির নোনিয়া বস্তি থেকে বলরাম নোনিয়া ও রাজমন চৌহান নামে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় দু’জনেই মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করেছে।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা জানান, চিনাকুড়িতে বহু দিন ধরেই মোবাইল চুরির কারবারটি সক্রিয়। কিন্তু কী ভাবে চলে এই কারবার? ধৃতদের জেরা করে সে বিষয়ে খানিকটা জানা গিয়েছে বলে জানান পুলিশকর্মীরা। তাঁরা জানান, টাকার লোভ দেখিয়ে প্রথমে এলাকার কিছু নাবালককে নিজেদের খপ্পরে টানে কারবারের মাথারা। তার পরে চলে ‘চুরি-বিদ্যা’ শেখানোর পাঠ। চলন্ত বাসে চেপে যাত্রীদের পকেট থেকে মোবাইল তুলে নেওয়ার ‘বিদ্যা’ পুরোপুরি শেখা হলে ‘কাজে’ নামানো হয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মোবাইল চুরি করার পরে ওই নাবালকদের প্রথম কাজ হল মোবাইলের সিমকার্ডটি খুলে ফেলে দেওয়া। তারপরে সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে মোবাইলগুলি চক্রের মূল মাথাদের হাতে হাতে তুলে দেয়। এর পরে চুরি করা মোবাইলগুলি চিনাকুড়ি নিয়ামতপুর সালানপুরের কিছু দোকানে গিয়ে ‘ফর্ম্যাট’ করানো হয়। তার পরে সুযোগমতো ক্রেতা বুঝে তা বিক্রি করা হয়। পুলিশ জানায়, অতীতে এমন অনেক বারই ঘটেছে, ফোন চুরির সময় ওই নাবালকেরা ধরা পড়ে গিয়েছে। কিন্তু ধরা পড়ার পরে তারা কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। তখন আর এদের পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে সাধারণ মানুষ তাদের দয়া দেখিয়ে ছেড়ে দেন। এ ভাবেই দিনের পর দিন এলাকা জুড়ে সক্রিয় রয়েছে মোবাইল চুরির চক্রটি।

পুলিশ জানায়, বুধবার ধৃতদের আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁদের তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ জানায়, ধৃতদের জেরা করে এই কারবারে আর কারা জড়িত, সে বিষয়ে খোঁজখবর করার চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন