টানাপড়েনে মোদী মেলা

দুর্গাপুরে আজ, শুক্রবার সেই মেলা উদ্বোধনে আসার কথা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের। কিন্তু বৃহস্পতিবার মেলার আয়োজনে তৃণমূলের বাগড়া ও অনুমতি দিতে পুলিশের টালবাহানার অভিযোগ তুলল বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ০১:৩৯
Share:

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল জানাতে শহরে আয়োজন হচ্ছে ‘মোদী মেলা’। দুর্গাপুরে আজ, শুক্রবার সেই মেলা উদ্বোধনে আসার কথা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের। কিন্তু বৃহস্পতিবার মেলার আয়োজনে তৃণমূলের বাগড়া ও অনুমতি দিতে পুলিশের টালবাহানার অভিযোগ তুলল বিজেপি। যদিও তৃণমূল বাধা দেওয়ার কথা মানেনি। পুলিশের দাবি, ভিন্-রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আসার খবর তারা এ দিন বিকেলে জেনেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Advertisement

শাসকদল ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে এ রাজ্যে তাদের মেলা করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আগেও তুলেছে বিজেপি। জানুয়ারিতে আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয়র সাংসদ মেলা আয়োজনের অনুমতি দিতে নানা ভাবে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভার বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সেই মেলার অনুমতি মেলে। মোদী মেলা নিiaয়েও বিজেপি-র অভিযোগ অনেকটা একই রকম।

বিজেপি সূত্রের দাবি, দুর্গাপুরের রাজীব গাঁধী ময়দানে তিন দিনের এই মেলাটি আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে দিল্লির এক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা। বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা গত কয়েক দিন প্রচার করছিলেন, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ মেলার উদ্বোধন করবেন। এ দিন দুপুরে অবশ্য বিজেপি দুর্গাপুর থানার পুলিশকে জানায়, রমন সিংহ নয়, বৃহস্পতিবার শহরে আসবেন রঘুবর দাস। সেই মতো ব্যবস্থা করতে হবে।

Advertisement

কমিশনারেটের দাবি, আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে কোনও ভিআইপি আসার খবর আগাম জানানো হয়নি। এ দিন দুপুরে সে কথা শুনে আয়োজক সংস্থাকে ডেকে পাঠিয়ে পুলিশ বিষয়টি জানতে চায়। পুলিশের দাবি, সংস্থার লোকজন তাদের জানান, ‘ভিআইপি’র ব্যাপারে তাঁদের কাছে তথ্য নেই। পুলিশের কাছে তাঁরা লিখিত ভাবে মেলা আয়োজনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চান। এর পরেই বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ডেকরেটরের লোকজন মণ্ডপের কাপড় খুলছেন। কী হল জানতে চাওয়ায় শ্রমিকেরা বলেন, ‘‘যারা আমাদের কাজ দিয়েছিল, তারাই কাজ করবে না বলছে। তাই আমরা কাপড় খুলছি।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ নবান্ন থেকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার জন্য ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসিপি অভিষেক মোদী জানান, জরুরি ভিত্তিতে মেলা ময়দান থেকে কিলোমিটার দুয়েক দূরে নেহরু স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টার নামার আয়োজন করা হয়। নবান্ন থেকে নির্দেশের খবর পেয়ে ফের শুরু হয় মণ্ডপের কাজ।

সন্ধ্যায় মেলার মাঠে পৌঁছে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূলের লোকজন হুমকি দেওয়ায় আয়োজক সংস্থা সরে দাঁড়াতে চেয়েছে। পুলিশও অনুমোদন দেওয়ায় ঝামেলা করেছে। আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মঞ্চ বাঁধার কাজ করাব। রাতে এখানে পাহারা দেবে আমাদের জনা পঞ্চাশ।’’ যদিও ডিসিপি অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘অনুমোদন দেওয়া নিয়ে ঝামেলা করার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ দুর্গাপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এ রকম মেলা হচ্ছে, তা-ই আমরা জানতাম না। তাই বাধা দেওয়ার প্রশ্ন নেই।’’

এ দিন সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘‘দুর্গাপুরে মোদী মেলা আয়োজনে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তা মিটে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বেলা ১১টা নাগাদ দুর্গাপুরে গিয়ে মেলার উদ্বোধন সেরে বর্ধমান যাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement