পরীক্ষার পরে। নিজস্ব চিত্র
বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস পর্যন্ত কোনওরকমে কেটেছিল। তারপরেই তীব্র হয় প্রসব বেদনা। কেতুগ্রামের মৌগ্রাম পঞ্চায়েতের চরসুজাপুরের বাসিন্দা বছর আঠারোর খালিদা খাতুনকে সোমবার কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। রাতেই মেয়ে হয় তার। শুক্রবার সেই হাসপাতালে বসেই সংস্কৃত পরীক্ষা দিল খালিদা। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে ফুটফুটে নাতনিকে নিয়ে ঠায় বসে রইলেন মা আসিদা বিবি।
ছোট থেকেই লেখাপড়ায় তীব্র আগ্রহ খালিদার। দিনমজুর বাবা খালেক শেখের পড়ানোর তেমন সামর্থ্য ছিল না। বড় মেয়ে খালিদা তাই বরাবরই মামাবাড়িতে পড়াশোনা করত। পড়তে পড়তেই অল্পবয়সে বিয়ে হয়ে যায়। পড়ার শর্তে তাতে না করেনি অষ্টাদশী। সংসারের ফাঁকে ফাঁকে চলছিল পড়াশোনা। শুক্রবার ছিল সংস্কৃত পরীক্ষা। হাসপাতালেই কড়া পুলিশি পাহারায় আসে প্রশ্নপত্র। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা ঘণ্টা দু’য়েকেই শেষ করে সে। খালিদার কথায়, ‘‘পরীক্ষা ভাল হয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানটাও ভাল ভাবে দিতে হবে।’’ জুরানপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইনূর হক বলেন, ‘‘যুদ্ধ করে মেয়েটা পড়ছে। ওর পাশে আছি।’’