বাড়ি লিখে না দেওয়ায় অত্যাচার করছে ছেলে-বৌমা, কোনওরকমে অন্যের দোরে দোরে ঘুরে জীবন কাটাচ্ছেন তিনি— বর্ধমান সিজেএম আদালতে এমনই অভিযোগ করলেন বৃদ্ধা। মামলা করার পরে বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে তাঁর দাবি।
বৃহস্পতিবার সত্তর বছরের তালিতের ওই বৃদ্ধা সুতপা বসুর দাবি, কয়েক বছর আগে স্বামী মারা যান। তারপর থেকেই স্কুল শিক্ষক বড় ছেলে ও তাঁর স্ত্রী বাড়ি তাঁদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। সুতপাদেবী বলেন, ‘‘ভরণপোষণ ও চিকিৎসার কোনও খরচ দেয় না ছেলে। আমায় বাঁচাতে গিয়ে ছোট ছেলেকেও মার খেতে হয়েছে।’’ সে সময় বর্ধমান মেডিক্যালেও ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ওই বৃদ্ধার আইনজীবী অতনু সরকার বলেন, ‘‘মহিলা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তা নেওয়া হয়নি। উল্টে আদালতে যাওয়ার কথা বলা হয়। মামলা করার পরেও বেশ কিছুদিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের ধরছে না।’’ অভিযুক্তরা মামলা তোলার জন্য চাপ দিচ্ছে বলেও তাঁর দাবি।
সুতপাদেবীর দাবি, দুরাবস্থার কথা জানিয়ে মহকুমাশাসকের কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। বাকি জীবনটা স্বামীর ভিটেয় কাটানোর ব্যবস্থা করে দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন। মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) মুফতি শামি সওকত বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। বৃদ্ধা অভিযোগ জানালে দু’পক্ষকে শুনানিতে ডাকা হবে।’’ মহিলা থানার এক আধিকারিকের দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পরে কেস রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিও চালানো হয়েছে। কিন্তু তাঁদের ধরা যায়নি।
এ দিন সুতপাদেবী আদালত চত্বরে বসে বলেন, ‘‘দশ মাস গর্ভে ধরে ছেলের জন্ম দিয়েছ। এখন শিক্ষক হয়ে সমাজ গড়ার দায়িত্ব তার। কিন্তু যে ছেলে মায়ের সঙ্গে এমন করে, তার কাছ থেকে ছাত্রেরা কী শিখবে?’’