ধৃত অফিসার। নিজস্ব চিত্র।
শংসাপত্র সংশোধনের জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পুরসভার এক অফিসারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার সকালে কুলটিতে গ্রেফতার করা হয় রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই ব্যক্তিকে। পুলিশের সঙ্গে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি তাঁর বাড়িতে যান। ধৃতের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুরসভার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি, জাল শংসাপত্র ও রবার স্ট্যাম্প উদ্ধার হওয়ায় তাঁরা আরও একটি অভিযোগ করেছেন বলে মেয়র জানান।
আসানসোল পুরসভার কুলটি কার্য়ালয়ে জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র বিভাগে রেজিস্ট্রার পদে রয়েছেন রামেশ্বরবাবু। ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জ্যোতিন গুপ্ত অভিযোগ করেন, তাঁর বোনের জন্ম শংসাপত্রে কিছু সংশোধনের জন্য মাস ছয়েক আগে নিয়মমাফিক আবেদন করেন। কিন্তু সে জন্য সাড়ে আট হাজার টাকা চান রামেশ্বরবাবু। জ্যোতিনবাবু বলেন, ‘‘তাড়াতাড়ি কাজের আশায় টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কাজ করে দেননি। নানা ছুতোয় ঘোরাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে কুলটি থানা ও মেয়রের কাছে অভিযোগ করি।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেন মেয়র। এ দিন সকালে তিনি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রামেশ্বরবাবুর বাড়ি যান। মেয়র বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে পুরসভার অনেক মূল্যবান নথি মিলেছে, যা কার্যালয়ের বাইরে বেরনো উচিত নয়। পুরসভার ছাপ মারা এক গুচ্ছ জাল শংসাপত্র মিলেছে। দফতরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু রবার স্ট্যাম্পও পাওয়া গিয়েছে। তাঁর বাড়িতে এই সব নথি কী ভাবে গেল, তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
মেয়র জানান, বিনা অনুমতিতে এই সব নথি বাড়িতে রাখার জন্য ওই ধৃতের বিরুদ্ধে থানায় আরও একটি অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর দাবি, এই ঘটনায় আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার অভিযোগ মিলেছে। পুলিশ জানায়, তারাও গোটা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে। পুরসভার কর্মী-আধিকারিকদের একাংশের দাবি, অভিযুক্ত অফিসারের বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ আগেও উঠেছে। চার বার তাঁকে সতর্কও করা হয়েছিল। যুব তৃণমূলের স্থানীয় নেতা সুদীপ চৌধূরী বলেন, ‘‘এমন কর্মীদের জন্যই সাধারণ মানুষ আস্থা হারান।’’
রামেশ্বরবাবু আরএসপি-র জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। তিনি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। কাজের চাপ থাকায় দফতরের নথিগুলি আধিকারিকদের না জানিয়ে বাড়িতে বয়ে এনেছিলাম কাজ করার জন্য।’’