দুপুর বেলা হঠাৎ বাড়িতে কড়া নাড়া। কয়েক জন কর্মী এসেছেন। বাড়িতে ঢুকে জমা জল তাঁরাই পরিষ্কার করে দিলেন। গত বছরের মতো এ বারেও শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ যাতে না হয়, তার জন্য দুর্গাপুর জুড়ে এমনই ‘অভিযান’ শুরু করেছে পুরসভা।
কী ভাবে চলছে এই অভিযান? পুরসভার দাবি, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু হয়েছে। এর জন্য তিনশো জন মহিলা কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদেরও কাজে লাগানো হয়েছে। ওয়ার্ড পিছু থাকছেন ২০ জন করে কর্মী। তাঁদের কাজের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এক জন করে সুপার ভাইজার এবং পুরসভার মেডিক্যাল অফিসার। মশা রুখতে অভিযান ঠিক মতো চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ‘আচমকা পরিদর্শনে’ যাচ্ছেন পুরসভার আধিকারিকেরা।
গত বছরই এই শহরের সেপকো টাউনশিপের এক মহিলার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গির কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ডিএসপি টাউনশিপের ভারতী রোডের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুর শংসাপত্রেও লেখা হয়, ‘সম্ভবত ডেঙ্গি হেমারেজিক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে’। এর আগেও শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
ডেঙ্গির এমন প্রকোপ রুখতে পুরসভার কর্মীরা বাড়ি বাড়ি লিফলেটও বিলি করছেন। সেখানে ডেঙ্গির লক্ষণ, চিকিৎসা, মশার বংশবিস্তার রোধে কী কী করণীয়, তা লেখা থাকছে। এ ছাড়া থাকছে ‘ফ্যামিলি কার্ড’। সেখানে কবে স্বাস্থ্যকর্মীরা সংশ্লিষ্ট বাড়িতে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, কেউ জ্বরে আক্রান্ত রয়েছেন কি না, জমা জল রয়েছে কি না, তার উল্লেখ থাকছে। মাসে দু’বার করে স্বাস্থ্যকর্মী সংশ্লিষ্ট বাড়িতে যাচ্ছেন। অক্টোবর পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) লাভলি রায় বলেন, ‘‘সচেতনতা বাড়াতে পাড়ায় পাড়ায় লাউড স্পিকারে প্রচার করা হচ্ছে। শহরকে ডেঙ্গির হাত থেকে বাঁচাতেই হবে।’’ মশার হাত থেকে নিস্তার পেতে বেনাচিতির বাসিন্দা তপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরসভার নির্দেশ মতো যা যা করা দরকার, সব করব।’’