ট্রেড লাইলেন্স নিয়ে জট কাটছে না দুর্গাপুর পুরসভায়। জাল লাইসেন্স রুখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে পুরসভা। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জাল লাইসেন্স ধরাও পড়েছে। তবে নিয়ম মেনে আবেদনের পরেও লাইসেন্স পেতে অযথা দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। বণিক সংগঠনের অভিযোগ, দ্রুত ট্রেড লাইসেন্স পেতে কী কী নথি লাগবে, তা স্পষ্ট করে না জানানোয় সমস্যা বাড়ছে। পুরসভা অবশ্য তা মানতে নারাজ।
পুরসভার বিরুদ্ধে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে শহরের ব্যবসায়ীদের একাংশের ক্ষোভ বেশ কিছু দিনের। তাঁদের অভিযোগ, নতুন লাইসেন্স পেতে সমস্যা হচ্ছে। পুরনো লাইসেন্স পুনর্নবীকরণেও দেরি হচ্ছে। ফলে, ব্যবসা করতে সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। পুরসভার দাবি, ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে অতীতে নানা অভিযোগ উঠেছে। বাম আমলে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরসভার বিরুদ্ধে পক্ষপাত, দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তৎকালীন পুরবোর্ড অবশ্য সেই অভিযোগ কখনও মানেনি।
তৃণমূল পুরবোর্ডে ক্ষমতায় আসার পরে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট ‘গাইড লাইন’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা করে। সে জন্য প্রথমে বেশ কিছু দিন নতুন লাইসেন্স দেওয়া বা পুনর্নবীকরণ বন্ধ রাখা হয়। পরে ধীরে-ধীরে প্রক্রিয়া শুরু হয়। পুরসভার নিয়ম মেনে জমা দেওয়া আবেদনে লাইসেন্স দেওয়ার কাজ শুরু হয়। আটকে দেওয়া হয় বাকিগুলি। পরে ব্যবসায়ীদের কথা ভেবে কিছু নিয়ম শিথিল করে শর্তসাপেক্ষে ট্রেড লাইসেন্স বা ‘বাফার লাইসেন্স’ দেওয়া শুরু করে পুরসভা। কিন্তু তার পরেও সমস্যা মিটছে না বলে অভিযোগ।
বণিক সংগঠন ‘বেঙ্গল সুবার্বান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর সম্পাদক প্রফুল্লকুমার ঘোষ জানান, সম্প্রতি তিনি পুরসভার লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ মধুসূদন মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করে সমস্যা মেটানোর আর্জি জানান। তাঁর দাবি, পুরসভার নিয়ম-কানুন ব্যবসায়ীদের কাছে ঠিক ভাবে পৌঁছে না দেওয়ায় সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। প্রফুল্লবাবুর অভিযোগ, ‘‘ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরসভার গড়িমসির জন্য শীঘ্রই অনেককে হয় ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হবে, না হলে বেআইনি ভাবে লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা চালাতে হবে। ফলে, ব্যবসায়ী ও কর্মীদের রোজগার সঙ্কটের মুখে পড়বে।’’
মেয়র পারিষদ মধুসূদনবাবু অবশ্য জানান, ট্রেড লাইসেন্স দিতে গেলে ব্যবসার বিভিন্ন ক্ষেত্র অনুযায়ী আরও কিছু লাইসেন্স লাগে। সে সব না থাকার জন্যই সমস্যা হয়। যেমন, কোনও মিষ্টির দোকানের ক্ষেত্রে ফুড লাইসেন্স, বর্জ্য সরানোর লাইসেন্স লাগে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মাঝে-মাঝেই বিভিন্ন বণিকসভার সঙ্গে আমরা বৈঠক করি। তখন ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন জানিয়ে থাকি।’’ এ ছাড়া পুরসভার নোটিস বোর্ডেও তা উল্লেখ করা থাকে বলে দাবি মেয়র পারিষদের।