পুজোর চার দিন এই মন্দিরেই থাকেন দেবী। নিজস্ব চিত্র।
মহালয়ার সকালে নদীতে তর্পণ করতে গিয়ে উঠে এসেছিল দুর্গামূর্তিটি। প্রথমে বুঝতে না পেরে কোশাকুশির জল সমেত মূর্তিটি জলেই ফেলে দেন তিনি। কিন্তু পরপর তিন বারই কোশাকুশিতে জল নেওয়ার সময় উঠে আসে মূর্তি। এরপরেই দশভূজা ওই মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হন মন্তেশ্বরের ভুরকুণ্ডা গ্রামে।
গ্রামের একশো ঘর বাসিন্দাদের বেশির ভাগই চাষাবাদে যুক্ত। তাদের মধ্যে মজুমদার, ভারতী, বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ১৭ ঘর বাসিন্দা দেবীর সেবাইত। তিন ইঞ্চি উঁচু ও চার ইঞ্চি চওড়া মূর্তিটিতে দেবী সিংহবাহিনি। সঙ্গে অসুর থাকলেও কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী নেই। বাসিন্দারা জানান, সারা বছর সেবাইতের পালা করে দেবীর নিত্যপুজো করেন। দুর্গাপুজোর সময় দেবী আসেন মন্দিরে। গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দাদের কথায়, দাঁইহাটে যখন মূর্তিটি মিলেছিল তখনই স্বপ্নে পুজোর বিধিও দেন দেবী। সেই বিধি মেনেই প্রতিপদ থেকে পুজো শুরু হয়। দুর্গার চার ছেলেমেয়ের নামে ঘট পুজো করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, দশমীতে পুজো শেষ হওয়ার পরে নবপত্রিকা নিয়ে যাওয়া হয় সেবাইতদের বাড়ি বাড়ি। এরপরে গ্রামের রামসাগর পুকুরেতা বিসর্জন করা হয়। দেবী ফিরে যান সেবাইতদের বাড়ি। তবে বহু বছরের পুরনো রীতি মেনে প্রতিমার ছবি তুলতে দেওয়া হয় না।
সেবাইত পরিবারের অনেক সদস্যই এখন কর্মসূত্রে বাইরে থেকেন। তবে পুজোয় ঘরে ফেরেন তাঁরা। চার দিন ওই ১৭ ঘর সেবাইত মিলে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া চলে। প্রসাদ বিলি করা হয় গ্রামেও। দুই সেবাইত অসীম মজুমদার ও গদাধর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মা আমাদের পুরো গ্রামকে বেঁধে রেখেছেন।’’