পুরভোটের জন্য বর্ধমান ও গুসকরার খসড়া সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশ হল। জেলাশাসক তথা পুরভোটের কমিশনার অনুরাগ শ্রীবাস্তব মঙ্গলবার দুপুরে তা প্রকাশ করে জানান, সংরক্ষণের তালিকা নিয়ে কোনও আপত্তি বা পরামর্শ থাকলে দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলা নির্বাচন দফতরে জানাতে হবে।
ওই তালিকা অনুযায়ী, বর্ধমানের পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান যে ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন, সেখান থেকে এ বার তাঁরা প্রার্থী হতে পারবেন না। ওই দু’টি ওয়ার্ডই মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। ২০১৩ সালের পুরভোটে তৃণমূল বর্ধমান পুরসভার ৩৫টি আসনেই জিতেছিল। সে বার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী তথা চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল খোকন দাস এ বার ওই ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবেন না। তেমনই মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ার জন্য গত বারের জয়ী প্রার্থী তৃণমূলের শহর সভাপতি অরূপ দাসকেও ওয়ার্ড পাল্টাতে হবে। তফসিলি জাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল সেলিম শেখ ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ও মহম্মদ সেলিমও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারছেন না। তবে আর এক চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল শিখা দত্ত সেনগুপ্ত আগের বারের মতো ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই দাঁড়াতে পারবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২, ৭, ১০, ১৩, ১৭, ২০, ২৩, ২৬, ৩০ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তফসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৩ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড। সাধারণ তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে ১৬ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ড। গত বছর একটি ওয়ার্ড তফসিলি জনজাতির সংরক্ষিত থাকলেও এ বছর খসড়ায় তা নেই।
গুসকরায় অবশ্য তফসিলি জনজাতির জন্য ২ নম্বর ওয়ার্ডটি সংরক্ষিত। এই পুরসভায় সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ১, ৩, ৯ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড। তফসিলি মহিলারা দাঁড়াবেন ৪ ও ১১ নম্বরে। সাধারণ তফসিলির জন্য সংরক্ষিত হল ৫, ৮, ১১ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড।
গুসকরার ১৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯টি ছিল শাসকদলের দখলে। সংরক্ষণের জেরে অন্য ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে হবে পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়, কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায় ও মল্লিকা চোঙদারকে। শুধু শাসকদল নয়, বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মনোজ সাউয়ের ওয়ার্ডও সংরক্ষণের কোপে পড়েছে। তৃণমূলের বহিষ্কৃত প্রাক্তন পুরপ্রধান চঞ্চল গড়াইও বর্তমান ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবেন না।
গুসকরার পুরপ্রধান অবশ্য বলেন, ‘‘এটি খসড়া তালিকা। কোনও আপত্তি থাকলে দু’সপ্তাহের মধ্যে তা জানানো যাবে। আমরা ভাল ভাবে দেখে মতামত জানাব।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ বিজেপি এবং সিপিএম নেতৃত্বেরও মত, সবে খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে উদ্যোগ করা হবে।