এই শাড়িতেই বাজার মাত। নিজস্ব চিত্র।
গতানুগতিক শাড়ি চোখ টানছিল না। তাঁতের বাজার ফিরে পেতে তাই এ বারের পুজোয় কালনার তাঁতিদের নতুন চমক ‘বাম্পার শাড়ি।’ ব্যবসায়ীদের দাবি, পুজোর বাজারে এই শাড়ি বিকোচ্ছেও দেদার।
প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, কালনা মহকুমার সমুদ্রগড়, ধাত্রীগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকার তাঁতিদের তৈরি শাড়ির সুনাম রয়েছে দেশ জুড়েই। পুজো শুরুর মাস তিনেক আগে থেকে এখানে তৈরি শাড়ি পৌঁছে যায় কলকাতা, আসানসোল-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বড় বাজারগুলিতে। শিল্পীরা জানান, এই সব এলাকার তাঁতিরা মূলত ডবল পাড় ও আঁচলের শাড়ি বুনতেই বেশি পছন্দ করেন। তবে ব্যবসায়ীরা জানান, একশো কাউন্টের সুতোয় তৈরি এই ধরণের শাড়িগুলি ক্রেতাদের আর তেমন পছন্দ হচ্ছে না। তা ছাড়া এই ধরণের শাড়ি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সুতো, জরির দাম এবং মজুরিও বেড়েছে খানিকটা। গতানুগতিক ডবল শাড়ির দাম বাজারে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা।
তাঁতিরা জানান, এই পরিস্থিতিতে ফের ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই বাম্পার শাড়ি বাজারে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এই শাড়ি মার্সিডাইজ ও গেঞ্জি সুতোয় বোনা হয়েছে। মার্সিডাইজ সুতোয় তৈরি শাড়ির দাম তুলনায় বেশি। বিভিন্ন বয়সীদের কথা মাথায় রেখে পাতলা ও হালকা বাম্পার শাড়িতে অজস্র রং ব্যবহার করা হয়েছে। কোথাও চার-পাঁচটি রং, কোনও শাড়িতে আবার দু’টি রং ব্যবহার হয়েছে। এ ছাড়া শাড়িতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের নকশার কাজও। রাখা হচ্ছে চওড়া পাড়। বিভিন্ন দোকানে বাম্পার শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকায়। সমুদ্রগড় টাঙ্গাইল তাঁত বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য কার্তিক ঘোষ বলেন, ‘‘কারুকার্যে ভরা হালকা শাড়িই এ বছর বেশি পছন্দ করছেন ক্রেতারা। বাম্পার শাড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’’ মহালয়ার পরে বাজার আরও জমবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।
এই শাড়ি কিনে খুশি ক্রেতারাও। কালনা শহরের বধূ শিউলি সাহা বলেন, ‘‘বাম্পার শাড়িটি বেশ নরম। রঙের বাহারও নজরে পড়ার মতো।’’ মার্সিডাইজ সুতোয় তৈরি জামদানির শাড়িরও ভাল চাহিদা রয়েছে বলে জানান তাঁতিরা। তাঁতের পাশাপাশি শান্তিপুর, ফুলিয়া, রানাঘাট, হবিবপুর, আঁশতলার বিভিন্ন পাওয়ার লুমে তৈরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার শাড়িরও ভাল চাহিদা রয়েছে।