জেলার নানা প্রান্তে রেস্তরাঁ, হোটেলের খাবারের গুণমান নিয়ে অভিযোগ তুলছেন ক্রেতারা। কিন্তু যেখানে অভিযোগ ভুরিভুরি, সেই জেলাতেই স্থায়ী ‘ফুড সেফটি অফিসার’ নেই। এই পরিস্থিতিতে খাবারের গুণগত মান বিচার, নিয়মিত অভিযানে খামতি থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তাদেরই একাংশ।
সম্প্রতি দুর্গাপুরের একটি রেস্তরাঁয় ঢুকে চিকেন-বিরিয়ানি থেকে দুর্গন্ধ পান বেসরকারি সংস্থার কর্মী শুভেন্দু সিংহ। মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানান তিনি। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপের আশ্বাসও দিয়েছেন। শুধু এই একটি ঘটনা নয়, দুর্গাপুর, আসানসোল-সহ জেলার নানা প্রান্তে এমন অভিযোগ প্রায়ই উঠছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
সম্প্রতি কিছু অভিযোগ পেয়ে আসানসোল পুরসভার সচিব প্রলয়কুমার সরকারের নেতৃত্বে একটি দল একাধিক রেস্তরাঁয় খাবারের গুণমান পরীক্ষা করে। তাতে কিছু অনিয়মও ধরা পড়ে। প্রলয়বাবু জানান, ওই সব রেস্তরাঁর খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।
কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব যাঁর, পশ্চিম বর্ধমানে সেই ফুড সেফটি অফিসারই নেই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পদটি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস’ আইন অনুসারে, ফুড সেফটি অফিসার হোটেল বা রেস্তরাঁর খাবারের গুণমান বিচার করে শংসাপত্র দেবেন। শংসাপত্র পুনর্নবীকরণ, নিয়মিত অভিযান চালানো, অনিয়ম দেখলে শংসাপত্র বাতিল, এ সবই দায়িত্ব ওই অফিসারের।
জেলায় এই পদে স্থায়ী নিয়োগ না হওয়ায় আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমার কয়েক হাজার হোটেল ও রেস্তরাঁয় নিয়মিত অভিযান বা পর্যবেক্ষণ চালানো হয় না বলেই জানা গিয়েছে। যদিও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘অন্য জেলার এক জন ফুড সেফটি অফিসারকে পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতি সোমবার এই জেলায় আসেন।’’ দেবাশিসবাবু জানান, ফুড সেফটি অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও আসানসোল ও দুর্গাপুরের একাধিক হোটেল ও রেস্তরাঁয় অভিযান চালানো হয়।
তবে খাবারের গুণমান যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের পরিকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি, মনে করছেন দুর্গাপুর পুরসভার কমিশনার অমিতাভ দাস ও আসানসোল পুরসভার সচিব প্রলয়কুমার সরকার।