প্রতীকী চিত্র।
দু’সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে বৃদ্ধ খুনের কিনারা এখনও করতে পারেনি পুলিশ। যদিও পুলিশের দাবি, তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে।
সিটি সেন্টারের অবনীন্দ্র বিথীতে অধিকাংশ সময় বাড়িতে একাই থাকতেন অবসরপ্রাপ্ত বিমাসংস্থার কর্মী সত্যরঞ্জন খাঁড়া (৭০)। স্ত্রী মারা গিয়েছেন। ছেলে সুমিত গাড়ি কেনা-বেচার ব্যবসায় জড়িত। মাঝে মাঝেই দীর্ঘদিন তিনি বাইরে থাকতেন। ১৬ নভেম্বর রাতেও বাড়িতে একাই ছিলেন সত্যরঞ্জনবাবু। গভীর রাতে পুলিশ তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে। ভারী অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়েছিল। বৃদ্ধের কাছে রাতে শুতে আসা অভিনন্দন ঠাকুর এসে ড্রইংরুমে টেবিলের পাশে রক্তাক্ত দেহ দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন। সেই সময় ঘরে টিভি চলছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ছেলে সুমিত, রাঁধুনি সুচরিতা মণ্ডল এবং অভিনন্দনকে জেরা করে তেমন সন্দেহজনক কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাড়ির পরিচারিকা নমিতা মোদকের কথায় অসঙ্গতি মেলে। তিনি সেপ্টেম্বর মাসে কিছুদিন কাজ করে মাঝে ছেড়ে দিয়েছিলেন। খুনের দিন কয়েক আগে ফের কাজে যোগ দেন। তাঁকে আটক করে পুলিশ। ১৯ নভেম্বর সুমিত ও নমিতাকে নিয়ে পুলিশ ও ফরেন্সিক বিভাগের কর্মীরা ওই বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা ধরে নমুনা সংগ্রহ, তদন্তের কাজ সারেন। এরপরেই নমিতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তাকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হয়। এখন তিনি জেল হাজতে রয়েছেন।
আদালত থেকে বেরোনোর সময় তিনি সুমিতের দিকে ‘আঙুল’ তুলেছিলেন। দাবি ছিল, কীভাবে ও কেন খুন, সুমিত সব জানেন। সুমিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। পুলিশও এই তথ্যকে আমল দিতে চায়নি বলে সূত্রে খবর। যদিও পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সব কিছুই নজরে রাখা হয়েছে। পুলিশের দাবি, নমিতার কাছে থাকা চাবি দিয়েই খুনের দিন গেটের তালা খোলা হয়েছিল। এমনকী নমিতাকে জেরা করে মেদিনীপুরে একজনের খোঁজেও গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তারপরে আর তেমন কোনও অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি।
খুনের ‘মোটিভ’ কী তা নিয়েও ধন্ধ কাটেনি। যদিও পুলিশের দাবি, তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। দ্রুত আসল অপরাধী ও অপরাধের কারণ প্রকাশ্যে আসবে। সোমবার কমিশনারেটের ডিসি অভিষেক মোদি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। এখন এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। দ্রুত খুনের কিনারা হবে।’’