River Bed Erosion

ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা কোথায়

প্রতি বছর বর্ষা এলেই ভাঙনের আশঙ্কায় থাকেন কালনা ও কাটোয়া মহকুমার নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। কী পরিস্থিতি, প্রশাসন কী ভাবছে— খোঁজ নিল আনন্দবাজার। কাটোয়া ২ ব্লকে চরসাহাপুর, চরকবিরাজপুর, অগ্রদ্বীপ গ্রাম দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙনে বিপর্যস্ত।

Advertisement

প্রণব দেবনাথ

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share:

ভাঙছে পাড়, অগ্রদ্বীপে। নিজস্ব চিত্র

বিভিন্ন জমানায় নানা রকম পদক্ষেপ হয়েছে। তাৎক্ষণিক কিছু ফল মিলেছে। কিন্তু স্থায়ী সমাধান হয়নি কোনও কিছুতেই, অভিযোগ কাটোয়া মহকুমার ভাঙন কবলিত বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের। বর্ষা এলেই তাঁদের স্মৃতিতে তাই ফিরে আসে জমি-ভিটে হারানোর যন্ত্রণা।

Advertisement

সেচ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মহকুমায় মঙ্গলকোট ব্লকের সাগিরা, কল্যাণপুর, খেরুয়া, কোয়ারপুর, ধান্যরুখি, কোয়ারপুরের মতো গ্রামগুলি ভাঙনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত। কেতুগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের কুলাই, নারেঙ্গা, পালিটা, ভবানিবেড়া, সুনিয়া, বিল্বেশ্বর, চরখি, বেগুনকোলা গ্রামের বড় অংশ অজয়ের ভাঙনে আগেই বিলীন হয়ে গিয়েছে। প্রতি বছর বর্ষার সময়ে নদীর জল বাড়লে ওই সমস্ত গ্রামগুলিতে পাড়ের মাটি ভাঙতে দেখা যায়। কাটোয়া ও দাঁইহাট শহরের বেশ কিছু এলাকা, কেতুগ্রামের চরসুজাপুর, রঘুপুর, মৌগ্রাম, নতুনগ্রাম, কল্যাণপুর, নারায়ণপুর, সীতাহাটি, শাঁখাই, বজরাডাঙা গ্রামও এখন ভাঙনের মুখে পড়ছে। সীতাহাটিতে পঞ্চায়েত ভবনের কয়েক ফুট দূর দিয়ে এখন বইছে ভাগীরথী। আর কিছুটা পাড় ভাঙলেই ভবনটি নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে, আশঙ্কায় রয়েছেন পঞ্চায়েতের কর্তারা।

কাটোয়া ২ ব্লকে চরসাহাপুর, চরকবিরাজপুর, অগ্রদ্বীপ গ্রাম দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙনে বিপর্যস্ত। বছর দশেক ধরে অগ্রদ্বীপের ঘোষপাড়ার কয়েকশো বিঘা জমি, বহু বাড়ি নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, এখন যেখান দিয়ে নদী বইছে, বছর দশেক আগে সেখানেই গ্রামের অংশ ছিল। চরসাহাপুর গ্রামেও কিছু দিন আগে নতুন করে অনেকটা অংশ ভেঙেছে। ২০০৬ সালে ভাঙনের তোড়ে অগ্রদ্বীপ-বেথুয়াডহরি রাস্তারও সলিল সমাধি ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সেই সময়ে নানা পদ্ধতিতে বারবার কাজ করেও ভাঙন রোধ করা যায়নি। এমনকি, বিদেশি পদ্ধতিতে পাড় বাঁধালেও তা বিফলে গিয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এখন অজয় ও ভাগীরথীর সঙ্গমস্থলে শাঁখাই ফেরিঘাটের অবস্থা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। কাটোয়া ও কেতুগ্রাম, নদীর দু’দিকেই পাড় ক্রমাগত ভাঙছে। শাঁখাই ফেরিঘাটে ঝুঁকি নিয়েই বাসিন্দাদের নদী পারাপার করতে হয়। দাঁইহাটেও মাটিয়ারি ঘাট, চৌধুরীপাড়া, চরপাতাইহাটে ভাগীরথীর ভাঙনের কোপ পড়েছে। নদীর পাড় চলে এসেছে প্রাচীন শ্মশানঘাটের কাছে। ভাঙন রুখতে মাস দু’য়েক আগে মাটিয়ারি ঘাট থেকে চরসাহাপুর গ্রাম পর্যন্ত নদীর পাড় বোল্ডার ফেলে তার দিয়ে বাঁধানো হয়েছে।

কেতুগ্রাম থেকে মঙ্গলকোট, ভাঙন কবলিত নানা জায়গার বাসিন্দাদের অভিযোগ, নানা সময়ে বহু বার প্রশাসনের কর্তারা এসে গ্রাম পরিদর্শন করে গিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন