বিপাক: উড়ে গিয়েছে চাল। বরফকল বস্তিতে। নিজস্ব চিত্র
ঝড়ে চাল উড়ে গিয়েছে এক মাস আগে। গরমের ছুটির পরে সপ্তাহখানেক স্কুল চালু হয়েছে। উপায় না থাকায় খোলা ছাদের নীচেই চলছে দুর্গাপুরের বরফকল শিশুশিক্ষা কেন্দ্র। রান্নাও হচ্ছে ফাঁকা জায়গায়।
সিটি সেন্টারের অদূরে বরফকল বস্তিতে একটি এক তলা টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে গত আট বছর ধরে একই সঙ্গে অঙ্গনওয়াড়ি ও শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের পঠনপাঠন চলে। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ৫৭ জন। অঙ্গনওয়াড়ি ও মিড-ডে মিলের রান্নাও হয়।
১৮ মে বিকেলে প্রবল ঝড়ে উড়ে যায় বাড়িটির টিনের চালের একাংশ। উপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ পরিবাহী তারে বিপজ্জনক ভাবে আটকে যায় টিন। পরে তা নামানো হলেও তড়িঘড়ি চাল সারাইয়ের ব্যাপারে পুরসভা উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় পড়ুয়াদের তত ভোগান্তি হয়নি।
সম্প্রতি স্কুল খুলে গিয়েছে। সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চলে পড়াশোনা। তার পরে খাওয়া-দাওয়া। চড়া রোদে দিন দশেক ধরে ক্লাস চলছে সেই খোলা ছাদের নীচেই। মাঝে বৃষ্টিও নেমেছে। রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে খুদেরা আশ্রয় নিচ্ছে সামনের এক চিলতে বারান্দায়।
চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া সাবিনা খাতুন বলে, ‘‘মাথার উপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে। দেখে ভয় লাগে। রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট হয়।’’ এক অভিভাবক বিক্রম শর্মা বলেন, ‘‘বাচ্চারা স্কুলে আসে। তাদের কথা ভেবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চাল মেরামতি করা দরকার। অথচ, কোনও উদ্যোগ নেই!’’ ফাঁকা জায়গাতেই রান্না হচ্ছে। রান্নায় নিযুক্ত জ্যোৎস্না দেবনাথ বলেন, ‘‘সব সময় চোখে-চোখে রাখতে হয়, যাতে কোনও কিছু উ়়ড়ে এসে না পড়ে। তা না হলে অসুস্থ হবে পড়ুয়ারা।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলের চাল নতুন ভাবে তৈরির জন্য ইতিমধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন এখনও কাজ হয়নি খোঁজ নিয়ে দেখব। দ্রুত যাতে কাজ শুরু হয় সে ব্যাপারে অবশ্যই উদ্যোগ হবে।’’