অপর্যাপ্ত বাস, অটো বন্ধে বিপাকে যাত্রী

শিল্পাঞ্চলের অন্তত ১৫টি রুটে এখন পরিস্থিতি এমনটাই। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাস রুটে অটো চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাতে স্বস্তিতে বাসের মালিক বা কর্মীরা।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০০:০০
Share:

হুড়োহুড়ি: বাসে ওঠার জন্য ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের ভিড় আসানসোলের এসবি গড়াই রোড ও হাটন রোডের সংযোগস্থলে। কেউ যাবেন জেলা হাসপাতালে, কেউ মহিশীলা, ইসমাইল বা সুকান্ত ময়দান। কিন্তু অপেক্ষাই সার। না আছে বাস, না মিলছে অটো।

Advertisement

দৃশ্য ২: বরাকরের বেগুনিয়া মোড়। যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ছে এখানেও। কেউ যাবেন ডিসেরগড়। কারও গন্তব্য রামনগর, মনবেড়িয়া বা কল্যাণেশ্বরী। সমস্যা সেই এক। বাস বা অটো কিছুই নেই।

দৃশ্য ৩: ২ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া সেনর‌্যালে মোড়। থিকথিকে ভিড়ের মধ্যে হা-হুতাশ করছেন যাত্রীরা। বি-ব্লক, ইন্দিরা চৌক, পাঁচগাছিয়া, নুনি বা সেটে কন্যাপুর যাওয়ার বাস, অটো কিছুই পাচ্ছেন না তাঁরা।

Advertisement

শিল্পাঞ্চলের আরও অন্তত ১৫টি রুটে এখন পরিস্থিতি এমনটাই। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাস রুটে অটো চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাতে স্বস্তিতে বাসের মালিক বা কর্মীরা। কিন্তু ওই সব রুটে পর্যাপ্ত বাস-মিনিবাস চালু না হওয়ায় দুর্ভোগ চরমে উঠেছে যাত্রীদের। নিত্য নাকাল হচ্ছেন কয়েক হাজার যাত্রী। তাঁদের বেশির ভাগই স্কুল-কলেজের পড়ুয়া বা সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মী। সমস্যা মেটাতে পরিবহণের উপযুক্ত ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

সম্প্রতি হাটন রোড ও গড়াই রোডের সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে ছিলেন নিরঞ্জন বিশ্বাস। বাস, অটো কিছুই না পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে আছি। কখন বাস পাব, কখন পৌঁছব জানি না!’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রুটে দিনে মাত্র চারটি বাস চলে। ফলে, এত দিন অটোই ছিল ভরসা। এখম সেটা বন্ধ হয়েছে। বেগুনিয়া মোড়ে অপেক্ষা করছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী অর্পিতা নস্কর। প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের স্কুল মনবেড়িয়ায় যেতে হবে। বাস, অটো কিছুই না পেয়ে সে বলে, ‘‘এত দিন অটোতেই গিয়েছি। এখন পড়েছি মুশকিলে।’’ এই রুটেও দিনে মাত্র দু’টি বাস চলে। বেগুনিয়া থেকে ডিসেরগড় রুটে আবার কোনও বাস চলে না। অথচ প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার মানুষের যাতায়াত।

পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমায় এই রকম অন্তত ১৫টি রুটে পর্যাপ্ত বাসের অভাবে অটোই ছিল ভরসা। শহরে বেআইনি অটো চলাচল বন্ধের দাবি তোলেন বাস মালিকেরা। বাসের রুটে অটো বন্ধের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। শহরে নানা দফায় বাস বন্ধ রেখেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সম্প্রতি টানা বাস বন্ধ রাখার জেরে কয়েক দিন ধরে ভোগান্তি পোহাতে হয় শহরবাসীকে। প্রশাসন অটো দৌরাত্ম্য রোখায় পদক্ষেপ করার পরে বাস চালু হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যাপ্ত বাসের অভাবে নাকাল হচ্ছেন যাত্রীরা।

বাস মালিক সংগঠনের নেতা সুদীপ রায়ের অবশ্য দাবি, যে সব রুটে বাস চলে না সেখানে অটো চালানো হলে তাঁদের আপত্তি নেই। অনেক রুটে বাস বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি। যাত্রীরা দুর্ভোগ থেকে কবে রেহাই পাবেন, সদুত্তর নেই প্রশাসনের কাছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী শুধু বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement