দুর্ঘটনার পরে তছনছ হয়ে পড়ে রয়েছে এলাকা। নিজস্ব চিত্র।
বিকেলে সবে দোকান খুলেছিলেন তাঁরা। কেউ পাশের দোকানির সঙ্গে টুকটাক গল্প করছিলেন, কেউ আবার ব্যস্ত ছিলেন দোকান সাফাইয়ে। আচমকা ধেয়ে আসে একটি দশ চাকার ট্রাক। মুহূর্তে চারটি দোকানের টিনের দেওয়াল ভেঙে ঢুকে যায় সেটি। মৃত্যু হয় এক হাতুড়ের। জখম হন এক ঘড়ি ব্যবসায়ী ও এক রিকশা চালকও।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ বর্ধমান-কালনা রোডে কেন্দ্রীয় কৃষি খামারের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহতদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন চালক ও খালাসি। তাঁদের গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত রাম প্রসাদের (৫৭) বাড়ি নীলপুরে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চারটে দোকানের টিনের চাল, দেওয়াল গুঁড়িয়ে গিয়েছে। রাস্তায় তছনছ হয়ে পড়ে রয়েছে জিনিসপত্র। একটি রিকশাও ভেঙেছে ট্রাকটির ধাক্কায়। প্রত্যক্ষদর্শী চন্দন রায়, কেয়া দত্তরা জানান, রাস্তার উল্টো দিকে জিনিসপত্র কিনছিলেন তাঁরা। হঠাৎ বিকট শব্দ পেয়ে দেখেন ট্টাকটি দোকানে ঢুকে পড়েছে। পাশ দিয়ে কোনওরকমে দৌড়ে পালাচ্ছেন দোকানিরা। জানা গিয়েছে, মৃত রামপ্রসাদবাবুও সেই সময় চেম্বার খুলে পাশের কল থেকে জল নিতে বেরিয়েছিলেন। প্রথমে তাঁকেই ধাক্কা মারে ট্রাকটি, তারপর আছড়ে পড়ে পাশের ঘড়ির দোকানে। সেই সময় পাশ দিয়ে রিকশা নিয়ে যাচ্ছিলেন দেশালি মাঝি। বাবুরপুকুর এলাকার ওই বাসিন্দাও রিকশা সমেত চাপা পড়ে যান। তাঁর পায়ে চোট লেগেছে। ঘড়ির দোকানের মালিক দেবাশিস দেবনাথেরও মাথা ও পায়ে গুরুতর চোট লেগেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম প্রামাণিক, পান্নালাল তুড়িদের দাবি, ডাম্পারের চালক ও খালাসি দু’জনেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। ট্রাকটিও টলমল করে চলছিল। ভরা বাজারে এমন দুর্ঘটনা দেখে আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না তাঁদের। তাঁদের দাবি, আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হবে।