জেলা পরিষদে ঘর বদল দুই পদাধিকারীর

প্রাক্তনের হাতেই রাশ, অনুমান নেতাদের

তিরিশ বছর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে এক জনের, আর এক জনের রাজনীতিতে আসা মেরেকেটে সাত বছর। এত দিন ‘তিরিশ’-এর সহকারী হয়েই কাজ করছিলেন ‘সাত’। তবে মঙ্গলবার উল্টে গেল পদটা।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০২
Share:

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে শম্পা ধারা ও দেবু টুডু। রয়েছেন দুই মন্ত্রীও। নিজস্ব চিত্র

তিরিশ বছর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে এক জনের, আর এক জনের রাজনীতিতে আসা মেরেকেটে সাত বছর। এত দিন ‘তিরিশ’-এর সহকারী হয়েই কাজ করছিলেন ‘সাত’। তবে মঙ্গলবার উল্টে গেল পদটা। সহকারী থেকে জেলা পরিষদের পুরো দায়িত্ব পেলেন সভাধিপতি শম্পা ধারা।

Advertisement

খণ্ডঘোষের চার নম্বর সাধারণ আসন থেকে জিতে জেলা পরিষদে এসেছেন তফসিলি জনজাতির শম্পা। ১৬ মাস আগে জেলা ভাগের সময় সহ সভাধিপতি হন তিনি। এ বার জেলা সভাধিপতির পদটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় দেবু টুডুর জায়গায় বেছে নেওয়া হয় তাঁকে। আর সহ সভাধিপতি হন দেবুবাবু।

জেলা পরিষদের এক সদস্য বলেন, “সভাধিপতি ও সহ সভাধিপতির ঘর পাশাপাশি। এক ঘর থেকে আর এক ঘরে যাওয়া যায়। এ দিন দু’জনকে দুই ঘরে বসে থাকতে দেখে মনে হচ্ছে এ পাশ, ও পাশ হয়ে গিয়েছে ব্যাপারটা।’’ দেখা যায়, সভাধিপতির ঘরে পুরনো আসবাবপত্র পাল্টে গিয়েছে। নতুন চেয়ার, টেবিল এসেছে। ঘরে রংয়ের পোঁচ পড়েছে। পাশের সহ সভাধিপতির ঘরে অবশ্য তেমন নতুনের ছোঁয়া লাগেনি। দেবুবাবুর ঘরে বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল, জেলা পরিষদের সদস্যদের ভিড় দেখা যায়। নতুন সভাধিপতিকে ঘিরে ছিলেন খণ্ডঘোষ থেকে আসা স্থানীয় নেতা মোল্লা আজিজুল, আসাদুল হক মণ্ডল, বাপ্পা পালিতরা। আর ছিলেন শম্পাদেবীর পরিজনেরা।

Advertisement

শম্পাদেবীর কাকিমা অনুপমা ধারা বলেন, “মুখচোরা মেয়েটিকে দল সভাধিপতি হিসেবে বেছে নিয়েছে দেখে ভালই লাগছে। দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেই উন্নয়ন ও মানুষের কাজ মান দিয়ে করবে এই ভরসা রয়েছে।’’ খণ্ডঘোষের নেতারাও বলেন, “শম্পার জন্য খণ্ডঘোষের নাম ইতিহাসে উঠে গেল। ওঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য সময় নিতে এসেছি।’’ জেলা পরিষদ-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক, কর্মীরাও এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন শম্পাদেবীকে।

সহকারী থেকে একেবারে মূল দায়িত্বে, সামাল দিতে পারবেন তো? শম্পাদেবী বললেন, “৫৮ জনকে নিয়ে আমাদের পরিবার। এখানে কেউ কারও ‘বস’ নয়। সবাই মিলেমিশে, কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের রথকে টেনে নিয়ে যাব।’’

নতুন সভাধিপতির নির্দেশ মানতে অসুবিধা হবে না? দেবু টুডু বলেন, “দলের নির্দেশ মানতে আমি বাধ্য। সংবিধান অনুযায়ী সভাধিপতির নির্দেশ আমাকে মানতেই হবে।’’ এরই মধ্যে পাশের ঘর থেকে অভ্যাসে শম্পাদেবী বলে উঠলেন, “বিকেল হতে চলল। সভাধিপতি সাহেব খেয়ে নেবেন চলুন।’’ দেবুবাবু পাশের ঘরে ঢুকতেই শম্পাদেবী চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। যা দেখে এক নেতা বলে উঠলেন, “পদের পরিবর্তন ঘটলেও জেলা পরিষদের ‘কন্ট্রোল’ কিন্তু প্রাক্তনের হাতেই থাকছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন