আবগারি তল্লাশির পরে মহিলার মৃত্যু, বিক্ষোভ

আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে বিজয়রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়ে চোলাইয়ের প্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও চোলাই তৈরি বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ মেলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯ ০২:৩২
Share:

বর্ধমান-কাটোয়া রোডে অবরোধ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

আবগারি দফতরের অভিযানের সময়ে টানাহ্যাঁচড়ার জেরে অসুস্থ হয়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগে পথ অবরোধ করলেন কিছু বাসিন্দা। শনিবার দুপুরে বর্ধমানের বিজয়রাম এলাকায় বর্ধমান-কাটোয়া রাস্তায় এই বিক্ষোভের জেরে যান চলাচলে সমস্যা হয়। আবগারি দফতরের কর্তাদের অবশ্য দাবি, দোলের মুখে চোলাই-অভিযান আটকাতেই এই ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

Advertisement

আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে বিজয়রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়ে চোলাইয়ের প্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও চোলাই তৈরি বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ মেলে। এ দিন সকালে দফতরের পূর্ব বর্ধমানের সুপার তপনকুমার মাইতি নেতৃত্বে ফের বিজয়রামে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০০ লিটার চোলাই, ২২৫০ লিটার জাঁক দেওয়া চোলাই ও বেশ কিছু উপকরণ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়।

ঘণ্টাখানেকের এই অভিযান শেষ হওয়ার পরে এলাকার কিছু বাসিন্দা অভিযোগ করতে থাকেন, অভিযানের সময়ে আবগারি দফতরের লোকজন মহিলাদের ‘মারধর’ করেছেন। টুনু দাস (৭২) নামে এক বৃদ্ধাকে দফতরের আধিকারিকেরা টানাহ্যাঁচড়া করেছেন। তাতে তিনি ‘ভয়’ পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে তাঁদের অভিযোগ। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।

Advertisement

মৃতার পরিজনদের একাংশের দাবি, তাঁরা ঘটনার সময়ে বাড়িতে ছিলেন না। ওই বৃদ্ধার সঙ্গে বছর দশেকের নাতনি ছিল। বৃদ্ধার মেয়ে হীরা দাস দাবি করেন, ‘‘দু’এক বোতল দেশি মদ বিক্রি করা হত। বাড়িতে চোলাই তৈরি বা বিক্রি হয় না। তার পরেও আবগারি দফতরের লোকজন আমাদের বাড়িতে ঢুকে দরজা ভেঙে তল্লাশি চালায়। সম্ভবত তখনই মাকে হাত ধরে সরিয়ে দেয়। তাতেই মা ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন।’’ মৃতার বৌমা সোমা দাসের কথায়, ‘‘আমরা দুই জা বাড়িতে ছিলাম না। সেই সময়ে বাড়ির ভিতর থেকে দেশি মদ নিয়ে গিয়েছে আবগারি কর্মীরা। বাড়ি এসে শুনলাম, হাত ধরে মাকে টানাটানি করায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।’’

আবগারি দফতরের বর্ধমান সদরের ওসি শশীভূষণ তিওয়ারি বলেন, “ওই বাড়ি থেকে দেশি মদই মিলেছে। কিন্তু আশপাশের সব বাড়ি থেকেই প্রচুর জাঁক দেওয়া চোলাই পাওয়া গিয়েছে। মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়া বা টানাহ্যাঁচড়া করার অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।’’ আবগারি সুপার তপনকুমার মাইতি বলেন, ‘‘এ রকম অন্যায় চাপের কাছে পিছিয়ে যাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। আমরা ওই এলাকায় চোলাইয়ের কারবার বন্ধের জন্য লাগাতার অভিযান চালাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন