শনিবার মধ্যাহ্নভোজে হাজির মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ছবি: উদিত সিংহ।
মাত্র দশ টাকার বিনিময়ে মিলছে মধ্যাহ্নভোজ। বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও বর্ধমান পুরসভার উদ্যোগে পয়লা মে থেকে বর্ধমানের তিনকোনিয়া বাসস্ট্যান্ড চত্বরে শুরু হল এই পরিষেবা। শুক্রবার প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল-সহ জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্তা। সেখানেই খাওয়াদাওয়া করেন তাঁরা। শনিবার সেখানে মধ্যাহ্নভোজ সারেন রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
বর্ধমান পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত তিনকোনিয়াতে ওই প্রকল্পটি চালু করা হলেও পরবর্তী সময়ে জেলার অন্যত্রও এটি শুরু করা হবে। প্রকল্পটি চালানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি ফাউন্ডেশন। যে কোনও ব্যক্তি সেখানে দান করতে পারেন। মেনুতে আমিষ কোনও পদ নেই। নিরামিষ মধ্যাহ্নভোজে থাকছে ভাত, আলু ভাজা, ডাল, সব্জি, টক দই। প্রকল্পটির কার্যকরী সভাপতি খোকন দাস জানান, প্রকল্পটি পরিচালনার জন্য ৩৭ জনের কমিটি করা হয়েছে। টেন্ডার ডেকে একটি খাদ্য পরিবেশক সংস্থার সঙ্গে সর্বনিম্ন মাথাপিছু ২৫ টাকা দরে চুক্তি করা হয়েছে। ওই সংস্থাই রান্না করা ও পরিবেশনের দায়িত্বে রয়েছে।
পুরসভার এক কর্তা জানান, উপভোক্তারা মাথা পিছু ১০ টাকা দরে খাবার পাবেন। অনুদান থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে বাকি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে। প্রাথমিক ভাবে সারা দিন দু’হাজার মানুষকে পেট ভরে খাওয়ানোর ব্যবস্থা থাকছে। তবে আপাতত তিনকোনিয়াতে কোনও কুপন কাউন্টার করা হচ্ছে না। কুপন মিলছে বর্ধমান পুরসভা থেকে। প্রতি দিন দুপুর ১২টার ভিতর কুপন কেটে নিতে হবে। বর্ধমানের নারকেলবাগানের বাসিন্দা, কাউন্সিলার সুশান্ত প্রামাণিক বলেন, “আশা করি, পুরসভার সব কাউন্সিলার ও কর্মীরা মিলে অরাজনৈতিক এই প্রকল্প সফল করতে সাহায্য করবেন।”
সম্প্রতি বর্ধমানের টাউন হলে এই প্রকল্প নিয়ে একটি কনভেনশন আয়োজিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শহরের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও ব্যবসায়ী ও পুরসভার কর্তারা। প্রকল্পটি চালাতে প্রশাসনকে জেলার এসপি কুণাল অগ্রবাল বলেন, “আমি দার্জিলিঙ শহরে কাজ করেছি। সেখানে প্রশাসনের উদ্যোগে সামান্য টাকায় সাধারণ মানুষকে সফল ভাবে খাওয়ানো গিয়েছিল। আশা করি বর্ধমানেও সেটি সম্ভব হবে।” শনিবার মধ্যাহ্নভোজ সেরে মন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, ‘‘খাবারের দাম ক্রমশই বাড়ছে। তাই শহরের গরিব মানুষ এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবে।’’