আসানসোল স্টেশন রোডের দেওয়ালে রেল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে আঁকা হয়েছে ছবি। নিজস্ব চিত্র
কোনওটিতে জলের অপচয় বন্ধের আবেদন। কোনওটি আবার বার্তা দিচ্ছে বৃক্ষরোপণের। নানা ছবিতে এমন সচেতনতামূলক প্রচারের ব্যবস্থা করেছেন আসানসোল রেল কর্তৃপক্ষ। আপাতত আসানসোলের নানা দেওয়ালে আঁকা হচ্ছে এই সব ছবি। তবে তা আসানসোল ডিভিশনের অন্য নানা জায়গাতেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে রেলকর্তারা জানিয়েছেন।
আসানসোলের স্টেশন রোড ধরে হেঁটে গেলে দু’পাশে চোখে পড়ে ছবিগুলি। সম্প্রীতির বার্তা থেকে গ্রামীণ এলাকার চিত্র, শ’পাঁচেক মিটার রাস্তার দেওয়ালগুলিতে চোখে পড়ে নানা অঙ্কনই। আসানসোলের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘রেল শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্যই এই উদ্যোগ।’’ আসানসোল শহরের পাশাপাশি ডিভিশনের অধীন অন্য এলাকাগুলিতেও এমন উদ্যোগ হবে বলে জানান ডিআরএম। বর্ষবরণের আগেই শহর সৌন্দর্যায়নের এই উদ্যোগ শেষ করা হবে বলে তাঁর আশ্বাস।
কিছু দিন আগেও জিটি রোড থেকে স্টেশন রোড ধরে আসানসোল স্টেশনে যাওয়ার সময়ে নাভিশ্বাস উঠত যাত্রীদের। রাস্তার দু’পাশে শৌচকর্মের জেরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নানাবিধ পোস্টারে দৃশ্যদূষণ তৈরি হত। স্থানীয় বাসিন্দা সুপ্রিয় চট্টরাজের কথায়, ‘‘এই সব দূষণের মধ্যেই এত দিন আমরা স্টেশনে পৌঁছেছি। এখন দেওয়ালে ছবিগুলি দেখে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে।’’ যাত্রীদের আর্জি, শহরের বাকি অংশেও এমন রঙের প্রলেপে পড়ুক।
রেলের এক আধিকারিক জানান, প্রতিদিন এই রাস্তায় কয়েক হাজার পথচারী যাতায়াত করেন। শহরে ঢোকার মুখটিই অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন ছিল। দেওয়ালের পাশে যেখানে-সেখানে অস্থায়ী দোকান ও হকারের দখলদারি ছিল। শহরবাসী চেয়েছিলেন, যাতায়াতের এই রাস্তা পরিষ্কার ও সুন্দর করা হোক। এই ভাবনা থেকেই দেওয়ালে ছবি আঁকানোর চিন্তাভাবনা শুরু হয়। রেলের নিজস্ব স্কুল ও শহরের নানা স্কুলের পড়ুয়াদের এবং কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের সহযোগিতায় ছবি আঁকানো হয়েছে।
আসানসোলের বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুরসভাও শহরকে দৃশ্যদূষণ থেকে মুক্ত করতে সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী হোক। এ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে বলে জানান আসানসোল পুরসভার মুখ্য বাস্তুকার সুকোমল মণ্ডল। তিনি জানান, শহরের বিভিন্ন স্কুল ও সামাজিক সংগঠনকে এই কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হবে।