যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই বচসা হতো ট্রেকার চালকদের সঙ্গে। এই অভিযোগ জানিয়ে বছর দুয়েক আগে জামুড়িয়া-চুরুলিয়া রুটের সমস্ত বাস তুলে নেন মিনিবাস মালিকেরা। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক ভোগান্তির অভিযোগ করেছেন জামুড়িয়া ও কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি।
চুরুলিয়ার বাসিন্দা শেখ আফরজ, ভুট্টো সিদিক্কিরা জানান, চুরুলিয়া, তালতোড়, সত্তর, লাইকাপুর, মদনতোড়, চিচুরবিল, দেশেরমহান-সহ বহু গ্রামের চাষিদের প্রধান ভরসা জামুড়িয়া বাজার। এ ছাড়া অনেক পড়ুয়া জামুড়়িয়ায় স্কুল ও টিউশন পড়তে আসেন। চুরুলিয়া নজরুল মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কালাম মল্লিকেরও অভিযোগ, ‘‘জামুড়িয়া থেকে কলেজের দূরত্ব ন’কিলোমিটার। দীর্ঘদিন বাস বন্ধ থাকায় কলেজে অনুপস্থিতির হার বাড়ছে।’’ জামুড়িয়া হয়ে চুরুলিয়ায় নজরুল মেলায় যেতে গিয়েও সমস্যা হচ্ছে বলে জানান যাত্রীরা।
এই রুটে বাস চলে না কেন? আসানসোল মহকুমা মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, “ওই রুটে সাতটা মিনিবাস চলত। যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে ট্রেকার চালকেরা গোলমাল করতেন। মিনিবাস মালিকেরা তাই বাস তুলে নেন। অবৈধ ট্রেকার এবং টোটো-র চলাচল বন্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, বৃহত্তর আসানসোল পুরসভা ও জেলা ভাগের পরে পরিবহণ সমস্যা মিটবে আশা করা হয়। কিন্তু তা-ও হয়নি। যদিও ট্রেকার চালক শেখ আব্বাসের দাবি, ‘‘কোনও গোলমাল হয়নি। যাত্রীদের চাহিদায় ট্রেকার চলছে।’’
এই পরিস্থিতিতে যাতায়াতের মূল ভরসা ট্রেকার। চুরুলিয়া থেকে জামুড়িয়া পর্যন্ত ট্রেকার ভাড়া ১৬ টাকা। যাত্রী ভর্তি না হলে ট্রেকার ছাড়তেও দেরি করে বলে অভিযোগ। চুরুলিয়া থেকে জামুড়িয়া পর্যন্ত টোটো-র ভাড়়া ন্যূনতম ১৫০ টাকা।
আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায়ের দাবি, ‘‘এই রুটে বাস চালাতে পরিবহণ দফতরে আর্জি জানিয়েছি।’’ পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরীর আশ্বাস, ‘‘কেন ওই রুটে বাস চলছে না, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’