গুসকরায় চিকিৎসা পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ
Hospital

মৃত্যুর পরে ‘রেফার’, অশান্তি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

যদিও অভিযোগ মানতে চাননি ও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, খুবই সঙ্কটজনক অবস্থায় রোগীকে আনা হয়েছিল। বর্ধমানে ‘রেফার’ও করেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুসকরা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ০০:০০
Share:

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে বাকবিতণ্ডা। নিজস্ব চিত্র

প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে অশান্তি বাধল গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মঙ্গলবার সকালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মারা যান স্থানীয় বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী রাজনারায়ণ গড়াই (৬৭)। গুসকরা পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান, বর্তমান বিজেপি নেতা চঞ্চল গড়াইয়ের ভাই তিনি। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকদের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দুর্ব্যবহারের অভিযোগে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।

Advertisement

যদিও অভিযোগ মানতে চাননি ও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, খুবই সঙ্কটজনক অবস্থায় রোগীকে আনা হয়েছিল। বর্ধমানে ‘রেফার’ও করেন তাঁরা। মৃতের পরিজনদের বিরুদ্ধে পাল্টা নিগ্রহ, হেনস্থারও অভিযোগ করেন তাঁরা। পরে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের দাবি, কোনও তরফেই লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ওই বৃদ্ধকে। কিছুক্ষণ অক্সিজেন দেওয়ার পরে, চিকিৎসকেরা বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন রোগীকে। মৃতের মেয়ে অরিজিতা গড়াই, ভাইঝি সর্বাণী গড়াইদের অভিযোগ, ‘‘অক্সিজেন দেওয়ার পরেও শ্বাসকষ্ট না কমায় ভর্তি নিতে অনুরোধ করি। কিন্তু কেউ কান দেননি। বাধ্য হয়ে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।’’ তাঁদের দাবি, সকালে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। চিকিৎসকেরা জানান, রোগীর অবস্থা খারাপ। অক্সিজেন দেওয়া শুরু হতেই মারা যান ওই বৃদ্ধ।

Advertisement

মৃতের আর এক ভাইঝি, বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী দেবযানী গড়াইয়ের অভিযোগ, এক মাসের মধ্যে একই পরিবারের দু’জন হাসপাতালের চিকিৎসকদের গাফিলতিতে মারা গেলেন। তাঁর দাবি, এ মাসের প্রথম দিকে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই চিকিৎসকদের গাফিলতিতেই তাঁর পিসি শ্যামলী গড়াইয়ের মৃত্যু হয়। এ দিনও আগে বর্ধমানে ‘রেফার’ করে দিলে এমনটা ঘটত না বলেও জানিয়েছেন তিনি। দেবযানীদেবী বলেন, ‘‘কাকা মারা যাওয়ার পরে দেবজ্যোতি ঘোষ নামে এক চিকিৎসক আমাদের বলেন, আমি তো রেফার লিখে দিয়েছি। নিয়ে যান রোগীকে। চার ঘণ্টার আগে আমরা মৃত বলতে পারি না।’’ এর পরেই উত্তেজনা ছড়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মৃতের পরিজনদের বিরুদ্ধে চিকিৎসক এবং নার্সদের হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে। ওই চিকিৎসকের দাবি, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা মাত্রই ওই রোগীকে রেফার করা হয়েছিল। তার পরেও রোগীর পরিজনেরা আমাকে নিগ্রহ করেন। নার্সদের হেনস্থা ও গালাগালি করা হয়।’’

স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে দাঁড়িয়ে পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর মল্লিকা চোঙদারও অভিযোগ করেন, ভাতার, আউশগ্রাম ও মঙ্গলকোটের মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। অথচ পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে না। স্থানীয় বিধায়কের মাধ্যমে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন জানানো হবে বলেও জানান তিনি। আউশগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ধীমান মণ্ডল বলেন, “গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একটি ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন