আদালতে তালা বন্ধ শৌচাগার। নিজস্ব চিত্র।
জমিজমা নিয়ে বিবাদ সংক্রান্ত একটি মামলার কাজে কাটোয়া আদালতে এসেছিলেন অম্বলগ্রামের ফণী মল্লিক। আচমকাই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ওই প্রৌঢ়ের। আদালতে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাটুকুও না থাকায় সিঁড়িতে বসে থাকতে হয় তাঁকে। কাটোয়া আদালতে এমন ছবিটাই দ্বস্তুর। বিচারপ্রার্থী ও ল’ক্লার্কদের অভিযোগ, চিকিৎসা পরিষেবা তো দূর, সব পরিকাঠামোই বেহাল।
ফি দিন তিনশোরও বেশি মামলার সওয়াল জবাব হয় এই আদালতে। অথচ নির্দিষ্ট কোনও জায়গা না থাকায় গাছের তলায় বসে থাকতে হয় বিচারপ্রার্থীদের। অনেক সময়ে, বসার জায়গা নিয়ে বচসাও বাধে। বিচারপ্রার্থীরা জানান, পার্কিং জোন নেই। অনেকে সময়েই সাইকেল চুরির অভিযোগ উঠেছে। আইনজীবীরা জানান, বার অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমে বিচারপ্রার্থীদের জন্য দু’টো ঘর থাকলেও তা ব্যবহার করা হয় না।
আলমপুরের কৃষ্ণপদ কুণ্ডু, মোরগ্রামের সুফল মাঝিদের কথায়, ‘‘মামলার তারিখ পড়লে আসতে হয়। কিন্তু একটু বসারও জায়গা পাই না। অনেক সময় চায়ের দোকানেও বসে থাকতে হয়।’’ তাঁদের দাবি, দু’টো নলকুপ থাকলেও তা বিকল পড়ে দীর্ঘদিন। চারটি শৌচাগারের দু’টির তালায় মরচে পড়ে গিয়েছে।
বিষয়গুলি নিয়ে ক্ষুব্ধ ল’ক্লার্করাও। তাঁদের দাবি, আদালত গেটের ডান দিকে কর্মীদের বসার জন্য ছোট্ট একটি ঘর থাকলেও তা ১৪০ জন ল’ক্লার্কের জন্য যথেষ্ট নয়। সেই ঘরে ঢুকে দেখা গেল, ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে, কোথাও বা বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তার। ল’ক্লার্ক বৈশাখী চন্দ্র, উত্তম মণ্ডল, অলিউল্লা শেখরা জানান, ঘর সংস্কারের জন্য একাধিকবার মহকুমাশাসক, জেলা জজ, পুরসভায় দরবার করেও কাজ হয়নি। তাঁদের আরও দাবি, ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থাও তাঁরা নিজেরাই অ্যাসোসিয়েশনের চাঁদায় করেন। কাজের সুবিধার জন্য একটি কম্পিউটারের ব্যবস্থাও করেছেন তাঁরা। কিন্তু জায়গা না পেয়ে মক্কেল সামলাতে হয় সেই টিনের শেডের নিচে বা গাছতলায়।
মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি জানান, বিষয়টি নিয়ে পুরসভা ও জেলা জজের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।