নিয়ন্ত্রণ: তখনও চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। কৌতুহলীদের ভিড় সামলাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি, চিৎকারের আওয়াজ কখনও কখনও শোনা যেত। কিন্তু স্বভাবে শান্ত হায়দর শেখ যে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন তা টের পাওয়া যায়নি। শুক্রবার দুর্গাপুরের বেনাচিতির উত্তরপল্লিতে বাড়ির উঠোন থেকে হায়দরের স্ত্রীর দেহ উদ্ধারের পরে এমনই ফিসফাস পাড়া জুড়ে।
উত্তরপল্লিতে বেশ কয়েক বছর ধরে স্ত্রী রেজিনা বেগম (৩০) ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন বীরভূমের নানুরের পোশলার বাসিন্দা, পেশায় রাজমিস্ত্রি হায়দার শেখ। বৃহস্পতিবার বাড়ির মালিক তরুণ রায়কে হায়দর ফোনে জানান, স্ত্রীকে মেরে পুঁতে দিয়েছেন ঘরের উঠোনে। এর পরেই পুলিশে খবর দেন তরুণবাবু। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ির চারপাশে পুলিশি পাহারা বসে। পাড়ায় পুলিশ দেখে চাপান-উতোর শুরু হয়ে যায় বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘হঠাৎ করে পাড়ায় পুলিশ কেন, প্রথমে বুঝতে পারিনি।’’
শুক্রবার সকালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হতেই বাসিন্দাদের একাংশ ভিড় জমান বাড়ির আশেপাশে। তবে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা কাউকেই উত্তরপল্লির ওই বাড়ির ধারে-কাছে ঘেঁষতে দেননি। দেহ উদ্ধারের খবর চাউর হতেই পড়শিদের মধ্যে শুরু হয় আলোচনা। বাসিন্দাদের একাংশ পাড়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন করেন।
প্রকাশ শ্রীবাস্তব নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘খুন করে দেহ বাড়ির উঠোনেই পুঁতে দেওয়া। এ তো ভয়ঙ্কর বিষয়। হায়দারকে শান্ত স্বভাবের বলেই জানতাম। ও কী করে এমনটা করল!’’ কালীদাস ধীবর নামে আরও এক জনের ক্ষোভ, ‘‘এ ভাবে পাড়ার মধ্যে অপরাধমূলক কাজকর্ম কিছুতেই মানা যায় না।’’
এমন ঘটনা ওই বাড়িতে ঘটছে, তা টের পাওয়া যায়নি? বাসিন্দাদের দাবি, মূল রাস্তা থেকে প্রায় ২৫ ফুট ভিতরে একতলার বাড়িটি। বাইরের দরজা বন্ধ করে দিলে ভিতরে কী ঘটছে তা বোঝা সম্ভব নয়। তবে বাসিন্দাদের দাবি, বুধবার বাড়ি থেকে বের হননি হায়দর।
গোটা ঘটনায় বিস্মিত বাড়িটির মালিক তরুণবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘ও যে খুন করতে পারে, কখনওই মনে হয়নি।’’