জমি ছাড়তে অনীহা, সমস্যা রাস্তার কাজে

জমির মালিকানা মিলেছে প্রায় দেড় বছর আগে। দাম বাবদ ৬০ লক্ষ টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে পূর্বতন মালিকদের। কিন্তু তার পরেও তারা জমির দখল না ছাড়ায় জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৫১
Share:

এই অংশেই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য জমি নেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

জমির মালিকানা মিলেছে প্রায় দেড় বছর আগে। দাম বাবদ ৬০ লক্ষ টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে পূর্বতন মালিকদের। কিন্তু তার পরেও তারা জমির দখল না ছাড়ায় জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, আসানসোলের পলাশডিহায় এই দখল উচ্ছেদ করতে তাঁরা হিমসিম খাচ্ছেন। বারবার পুলিশের সহায়তা চেয়েও তা মিলছে না। পুলিশ অবশ্য জানায়, উৎসবের মরসুম শেষ হলেই তারা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারা সাহায্য করবে, এ কথা আগেই জানানো হয়েছে।

Advertisement

২ নম্বর জাতীয় সড়ক ছ’লেন করার কাজ চলছে। প্রয়োজন অনুযায়ী নানা জায়গায় উড়ালপুল ও আন্ডারপাস তৈরি করা হচ্ছে। এই রকম একটি উড়ালপুল তৈরি হচ্ছে আসানসোলের সেনর‌্যালে মোড়ের কাছে। রাস্তার নকশা অনুযায়ী, দুর্গাপুর থেকে আসানসোল শহরের দিকে যাওয়া গাড়িগুলিকে এই মোড় থেকে শহরে ঢুকতে হলে উড়ালপুল না ধরে আলাদা একটি সার্ভিস রোড দিয়ে যেতে হবে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এই সার্ভিস রোডটি তৈরির জন্য এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে জমি কিনেছেন। জমির মালিকদের দাম মেটানো হয়ে গিছে।

কিন্তু এখন বিপত্তি বেধেছে রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে সেকশন ইনচার্জ মলয় দত্ত অভিযোগ করেন, দখলদারদের উঠে যাওয়ার জন্য একাধিক বার নোটিস পাঠানো হয়েছে। এলাকায় গিয়ে মাইকে ঘোষণাও করা হয়েছে। কিন্তু পুরনো মালিকেরা কিছুতেই জমি ছাড়তে চাইছেন না। শুধু তাই নয়, উঠে যাওয়ার কথা বললেই তাঁরা মারমুখি হয়ে ওঠেন বলেও অভিযোগ। মলয়বাবু বলেন, ‘‘দখলদার উচ্ছেদের জন্য পুলিশের সহায়তা চেয়ে আমরা আসানসোল উত্তর থানায় আবেদন করেছি। কমিশনারেটের বিশেষ শাখার কাছেও লিখিত আবেদন জমা দিয়েছি। কিন্তু লাভ হয়নি।’’ এই অবস্থায় ওই জায়গায় রাস্তা সম্প্রসারণ থমকে গিয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু সার্ভিস রোড তৈরি না হলে মূল প্রকল্পটিই থেমে থাকবে।

Advertisement

মলয়বাবু জানান, সার্ভিস রোড তৈরি না হওয়ায় আসানসোল শহরে যাওয়া গাড়িগুলির জন্য জাতীয় সড়কের একটি বড় অংশ ছেড়ে রাখতে হয়েছে। ফলে, ওই মোড়ের কাছে সম্প্রসারণের কাজ করা যাচ্ছে না। উড়ালপুলটিও পুরোপুরি তৈরি করা যাচ্ছে না। তাছাড়া, সড়কের এই অংশটি বেশ সঙ্কীর্ণ হওয়ায় গাড়ির চাপে যানজট হচ্ছে।

পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) জে মার্সি অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে একটি বিশদ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত সমাধান করা হবে।’’ এসিপি (স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ) অভিষেক রায় বলেন, ‘‘উৎসবের মরসুম শেষের পরেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করা সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে।’’ তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, জমি থেকে উচ্ছেদের মতো বিষয়ে প্রশাসন তড়িঘড়ি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ করতে রাজি নয় পুলিশ। তাই সব দিক খতিয়ে দেখে কাজে নামতে চাইছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন