দুই রাতে লাগামছাড়া শব্দদানব

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা (১০ মাইক্রোমিটারের থেকে ছোট আকারের) ও সালফার-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড যৌগের পরিমাণ কত, তার নিরিখেই বায়ু দূষণের মাত্রা মাপা হয়

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১৩
Share:

দেওয়ালিতে বেশ কিছু জায়গায় শব্দ-দানবের উপদ্রব সহ্য করতে হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

শব্দবাজি সংক্রান্ত আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরে শহরের পরিবেশকর্মীরা ভেবেছিলেন দূষণ কমবে উৎসবের মরসুমে। কিন্তু রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, কালীপুজো ও দেওয়ালির দিন সার্বিক ভাবে দুই বর্ধমানে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মাত্রা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় দেড় গুণ। আর, দুর্গাপুরে তা ছিল কখনও দ্বিগুণ, কখনও বা আড়াই গুণেরও বেশি।

Advertisement

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা (১০ মাইক্রোমিটারের থেকে ছোট আকারের) ও সালফার-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড যৌগের পরিমাণ কত, তার নিরিখেই বায়ু দূষণের মাত্রা মাপা হয়। দুর্গাপুরে কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে বাকিগুলি নির্ধারিত মাত্রার নীচে থাকলেও দুশ্চিন্তায় ফেলে ভাসমান ধূলিকণার মাত্রা। বাতাসে ১০ মাইক্রোমিটারের ছোট আকারের ভাসমান ধূলিকণার গড় স্বাভাবিক পরিমাণ, প্রতি ঘনমিটারে ১০০ মাইক্রোগ্রাম। শিল্পতালুক থাকায় ও শহরের প্রায় মাঝ বরাবর চলে যাওয়া জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় এমনিতেই বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার হার অধিকাংশ সময়ে স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকে দুর্গাপুরে। তার উপরে সমস্যা বাড়িয়েছে পুজোর মরসুমে বাজি পোড়ানো।

পর্ষদের হিসেব অনুসারে, এ বছর কালীপুজোর আগের দিন অর্থাৎ ৫ নভেম্বর সোমবার দুর্গাপুরে সন্ধ্যা ৬টায় বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার হার ছিল প্রায় ১৪১। এর পরে প্রতি ঘণ্টায় লাফিয়ে লাফিয়ে তা বেড়েছে। রাত ১১টায় তা হয়েছে প্রায় ১৬৯। তবে রাত ১২টায় ছিল ১৬৪। কালীপুজোর রাতে অর্থাৎ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ভাসমান ধূলিকণার হার ছিল ১৩৬। রাত ৮টা নাগাদ সেই পরিমাণ দাঁড়ায়, ২১৬। রাত ৯টায় ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ, ২৬৫। রাত ১০টা ও ১১টায় তা ছিল, যথাক্রমে ২৫৭ ও ২৫৩। তবে রাত ১২টায় তা কমে দাঁড়ায় ১৫৫।

Advertisement

আগের দু’দিনের চেয়ে দেওয়ালির সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি ভাল ছিল। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দুর্গাপুরের বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়েও নীচে। ৯১-এর সামান্য বেশি। কিন্তু রাত ৯ টায় তা হয়ে যায় প্রায় ২০৪। রাত ১০টা ও ১১টায় ছিল যথাক্রমে ২৫৮ ও ২২৯ (ধূলিকণার পরিমাপ মাইক্রোগ্রাম/ ঘনমিটার)।

শুধু পর্ষদের পরিসংখ্যানই নয়, দুর্গাপুরের কালীপুজোর রাত মোটামুটি নির্বিঘ্নে কাটলেও দেওয়ালিতে বেশ কিছু জায়গায় শব্দ-দানবের উপদ্রব সহ্য করতে হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সেই সঙ্গে আতসবাজিও সমস্যা তৈরি করেছে। বুধবার রাতের দিকে সিটি সেন্টার, বেনাচিতি, বিধাননগর-সহ বেশ কিছু এলাকায় মাঝে মাঝে কানফাটা শব্দবাজির আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে। পর্ষদের এক কর্তা জানান, সিটি সেন্টার এলাকা থেকে কন্ট্রোল রুমে সবথেকে অভিযোগ এসেছিল। পর্ষদের মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। রাত সাড়ে ১০ টার পরে আর তেমন উপদ্রব সহ্য করতে হয়নি বাসিন্দাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন