Raniganj

রাস্তার দু’পাশেই জবরদখল করে ব্যবসা, যানজটে হাঁসফাঁস শহর

প্রায় দু’দশক আগে রানিগঞ্জ শহরের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নেতাজি সুভাষ বসু রোডকে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ০৭:০৫
Share:

এমনই হাল রানিগঞ্জ শহরের। নিজস্ব চিত্র

রাস্তার দু’পাশের জায়গা দখল করে আনাজ, ফল, ফুল থেকে পানগুমটি, গ্যারাজ চলছে। এই অভিযোগ উঠেছে রানিগঞ্জ শহরে। নিত্যযাত্রীরা জানান, ‘পার্কিং জ়োন’ না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতারা যত্রতত্র যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখতে বাধ্য হন। সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময়ে যানজটে জেরবার রানিগঞ্জ শহর।

Advertisement

প্রায় দু’দশক আগে রানিগঞ্জ শহরের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নেতাজি সুভাষ বসু রোডকে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। ফলে, শহরের ভিতর দিয়ে দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল অনেক বেড়ে যায়। নেতাজি সুভাষ বসু রোডের সঙ্গে ১৪টি সংযোগকারী রাস্তা যুক্ত। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, প্রতিটি রাস্তার ফুটপাত দখল করে নিয়েছেন হকারেরা। নিত্যযাত্রীরা জানান, প্রায় চার কিলোমিটারের নেতাজি সুভাষ বসু রোডের পঞ্জাবি মোড়ে পানগুমটি, খাবারের হোটেল, রামবাগান ও রাজবাড়ি মোড়ে ফল, ফুল, আনাজ, মাছ, মাংস, শিশুবাগান মোড়ে ফুলের নার্সারি, গ্যারাজ, হোটেল, গুমটি, তারবাংলা মোড়ে ১০টি গ্যারাজ, গুমটি, মাংসের দোকান রয়েছে। স্কুলপাড়া মোড় ও পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফুটপাতেরও একই অবস্থা। এ ছাড়া, রানিগঞ্জ বাজারের সংযোগকারী রাস্তা সিআর রোড, মহাত্মাগান্ধী রোড, বিসি রোড, তিলক রোডের দু’পাশে পোশাক-সহ রাস্তায় সামগ্রী ফেলে রেখে বেচাকেনা চলে। পাশাপাশি, ঠেলায় খাবার থেকে বিভিন্ন সামগ্রীর ব্যবসা তো চলছেই।

বাসিন্দারা জানান, পিএন মালিয়া রোড-সহ কয়েকটি সংযোগকারী রাস্তায় দিনের বেলায় পণ্যবোঝাই গাড়ি ঢোকে। এর কারণে অযথা যানজট হয়। সেই সঙ্গে রয়েছে টোটোর ‘দৌরাত্ম্য’। বিদ্যালয়,অফিস-কাছারি চালু ও বন্ধ হওয়ার সময় বেশি নাকাল হতে হয়। উৎসবের দিনগুলিতে রাস্তায় হাঁটা যায় না বলে দাবি। অভিযোগ, প্রশাসন বার বার যানজটমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, তা কার্যকর হচ্ছে না।

Advertisement

সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান জানান, শহরের দু’দিকে দু’টি বাইপাস তৈরির পরিকল্পনা নেয় রাজ্য। রানিসায়র মোড় থেকে বার্নস ক্লাব মোড় পর্যন্ত বাইপাস তৈরি হলেও, পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে সারা বছর তা ব্যবহার করা যায় না। মঙ্গলপুর থেকে সাহেবগঞ্জ বাইপাসটি চালু করতে জমি দেখা হয়। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। দু’টি বাইপাস চালু হলে যানজট সমস্যা অনেকটা মিটবে বলেমনে করেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা, আইনজীবী ভুপেন্দ্রবাহাদুর খড়কা জানান, প্রশাসন হকার উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছিল। লাভ হয়নি। বরং তাদের ‘দৌরাত্ম্য’ আরও বেড়েছে। একমুখী রাস্তার পরিকল্পনাও প্রায় ভেস্তে গিয়েছে। রানিগঞ্জ কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোপাল আচার্যের দাবি, পুরভবনের পাশের বাণিজ্যভবন প্রাঙ্গণ ও তারবাংলায় ১০ বিঘার মতো সরকারি জায়গা রয়েছে। এই দু’টি জায়গায় পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায় জানান, রানিগঞ্জ শহরকে যানজটমুক্ত করতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। এ দিকে, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের এক আধিকারিক জানান, সাহেবগঞ্জ থেকে মঙ্গলপুর বাইপাস তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন