এসেছে বিদ্যুতের খুঁটি, আলো জ্বলেনি

রাজ্য সরকারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ঘটা করে বিদ্যুদয়নের জন্য দরকারি পরিকাঠামো তৈরি করা হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। পরিকাঠামো তৈরির চার বছর বাদেও পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রা গ্রামের কয়েক পাড়ায় পৌঁছয়নি রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বারবার দরবার করেও ফল মেলেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৬ ০১:২৩
Share:

কেন্দ্রা গ্রামে সেই খুঁটি। নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য সরকারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ঘটা করে বিদ্যুদয়নের জন্য দরকারি পরিকাঠামো তৈরি করা হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। পরিকাঠামো তৈরির চার বছর বাদেও পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রা গ্রামের কয়েক পাড়ায় পৌঁছয়নি রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বারবার দরবার করেও ফল মেলেনি।

Advertisement

অজয়ের গা ঘেঁষে পাণ্ডবেশ্বরের উত্তর দিকে রয়েছে কেন্দ্রা। রয়েছে পঞ্চায়েতের ৩টি সংসদ। প্রায় হাজার ছ’য়েক মানুষের বাস এখানে। বাসিন্দারা জানান, বছর চারেক আগে গ্রামের বাদ্যকর ও বাউরিপাড়া বাদে সব জায়াগাতেই খুঁটি পোঁতা হয়। তার টানার কাজও তড়িঘড়ি শেষ করা হয়। কিন্তু তারপরেই গ্রামে বিদ্যুৎ নিয়ে আসার কাজ থমকে যায়।

এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের ভরসা করতে হয় ইসিএলের দেওয়া বিদ্যুৎ সংযোগের উপরে। কিন্তু সেটির হালও তেমন ভাল নয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকাল ৮টা হলেই ফি দিন চার ঘণ্টা ধরে কেটে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। বিকেলেও ঘণ্টা দু’য়েক আলো জ্বলে না এলাকায়। রাত ৮টায় বিদ্যুৎ এলেও এ বার শুরু হয় লো ভোল্টেজের সমস্যা। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে নামমাত্র আলো জ্বলে এই এলাকায়। স্থানীয় এক স্কুলের পড়ুয়া জানায়, ‘‘রাতে পড়তে বসলে কাছে লণ্ঠন বা হ্যারিকেন নিয়ে বসতে হয়। নইলে চোখ খারাপ হয়ে যাওয়ার জোগাড়!’’ শিল্পাঞ্চলের চিড়চিড়ে গরমে দুর্ভোগ আরও বাড়ে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা অর্ধেন্দু পাল, বামা বাউরি, দেবদাস বাউরিরা। তাঁদের আক্ষেপ, ‘‘সরকারি ভাবে তোড়জোড় শুরু হওয়ায় ভেবেছিলাম, এ বার দুর্ভোগ কমল। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতির বদল হল কই!’’

Advertisement

গ্রামের বাসিন্দা সিপিআই (এমএল) নেতা সাধন দাস জানান, কিছু দিন আগে বাসিন্দাদের একাংশ এলাকায় সরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ সংযোগ ও এলাকার উন্নয়নের দাবিতে অনশনেও বসেছিলেন। দুর্গাপুরের মহকুমা প্রশাসনের তরফে তখন অবস্থা বদলানোর আশ্বাস দেওয়া হয় দুর্গাপুরের তৎকালীন মহকুমাশাসক পায়ে হেঁটে গ্রাম পরিদর্শনও করেন। তারপর থেকে গ্রামে রাস্তাঘাটের খানিক উন্নতি হলেও বিদ্যুত মেলেনি। সমস্যা রয়েছে এলাকায় পানীয় জলের সংযোগ নিয়েও। এলাকায় ইসিএলের ৩টি জলের কল থাকলেও তাতে জলের দৈনন্দিন চাহিদা মেটে না বলে জানান বাসিন্দারা। সাধনবাবু বলেন, “সদ্য নির্বাচিত বিধায়কের কাছে অসমাপ্ত বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শেষ করার আর্জি জানাব।’’ পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারির আশ্বাস, ‘‘বিষয়টি আগে কেউ আমার নজরে আনেননি। খোঁজ নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।”

রাজ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিগমের তরফে অবশ্য ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ না যাওয়ার অন্য একটি ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। পাণ্ডবেশ্বরের স্টেশন ম্যানেজার শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘রাজীব গাঁধি বৈদ্যুতিকরণ যোজনায় কাজ শুরু হয়। পরিকাঠামোগত তৈরির কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পর গ্রামের অনেকেই টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ নিতে রাজি না হওয়ায় ওই প্রকল্প ফিরে গিয়েছে। পরে অবশ্য বাসিন্দারা টাকা দিয়ে বিদ্যু নিতে চাইলেও আর কিছু করা যায়নি। শীঘ্রই কেন্দ্র সরকারের দিনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনার কাজ শুরু হবে। আশা করি এ বার ওই প্রকল্পে বিদ্যুৎ যাবে গ্রামে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন