—প্রতীকী চিত্র।
এ এক অভিনব কায়দায় চুরি। সোনাদানা, টাকাপয়সা ছেড়ে ছাগল চুরি! চুরির ধরন দেখে অবাক সকলে। চারচাকা ও বাইক নিয়ে চোরের দল হাজির হচ্ছে গ্রামে। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা ও মেমারিতে ছাগল চুরি করতে গিয়ে দু’টি চোরের দল গ্রেফতার হল পুলিশের হাতে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারি থানার শান্তিডাঙা কলোনি পাড়ার বাসিন্দা গোপাল হালদারের একটি ছাগল শনিবার সকালে বাড়ির বাইরে বাঁধা ছিল। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ির লোকজন দেখেন, তিনজন লোক একটি বাইকে চাপিয়ে ছাগলটিকে নিয়ে পালাচ্ছেন। বাড়ির লোকজন ফোন করে বিষয়টি পাশের গ্রামের লোকজনদের জানান। পাশের গ্রামের বাসিন্দারা জীবনঠাকুর মোড়ে বাইকটিকে আটকান এবং ছাগলটিকে তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করেন। এর পর তিন জনকে আটকে রাখেন। কয়েক জন তাঁদের ধাক্কাধাক্কিও করেন বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। তারা ওই তিন জনকে থানায় নিয়ে যায়। পরে গোপালের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম মীর মুক্ত, মনির শেখ ওরফে মনি ও নাসিরুদ্দিন সিকদার। কালনা থানার নারেঙ্গা গ্রামে তাঁদের বাড়ি। ধৃতেরা দীর্ঘ দিন ধরে শান্তিডাঙা ও তার আশপাশ এলাকায় ছাগল চুরি ঘটনায় জড়িত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। রবিবার ধৃতদের বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। তবে ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন ভারপ্রাপ্ত বিচারক।
অন্য দিকে, কলকাতা থেকে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরে ছাগল চুরি করতে এসে ধরা পড়ে গেলেন তিন যুবক। তাঁরা চারচাকা গাড়িতে ঘুরতেন। শিকার ধরতে চলে যেতেন দূরদূরান্তে। এ বার ছাগল চুরির অপরাধে তাঁদেরকে গ্রেফতার করে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ নাজহাল, মহম্মদ মাজহাল এবং মইনুদ্দিন খান। এদের বয়স ২৫-২৭ এর মধ্যে। বাড়ি কলকাতার গার্ডেনরিচ এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করার পর, রবিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয়। আটক করা হয়েছে একটি চারচাকা গাড়িও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুসকরা শহরের ইটাচাঁদা এলাকা থেকে একটি ছাগলকে চারচাকা গাড়িতে তুলতে দেখেন স্থানীয় কয়েক জন। লোকজন কাছাকাছি আসতেই গাড়ি নিয়ে চম্পট দেন তাঁরা। ওই গাড়ির পিছন ধাওয়া করে বেশ কিছুটা দূরে তাঁদের ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। এর পর খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গাড়ি-সহ তিন জনকে আটক করে নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইটাচাঁদার বাসিন্দা আলিনূর শেখ এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ছাগলের মালিক তিনিই। আলিনূরের বগ্গির অভিযোগ, তাঁর ছাগলটি রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গায় চরছিল। তখন ওই তিন যুবক পাউরুটির লোভ দেখিয়ে ছাগলটিকে তাঁদের গাড়ির কাছ পর্যন্ত ডেকে নিয়ে আসেন। সুযোগ বুঝে চারচাকা গাড়িতে চ্যাংদোলা করে ছাগলটিকে চাপিয়ে নিয়ে চম্পট দেযন তাঁরা। বিষয়টি নজরে পড়ে যায় কয়েক জনের। তার পর স্থানীয়েরাই তাঁদের ধরে ফেলেন।
প্রাথমিক জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছেন, এর আগেও তাঁরা বহু জায়গায় ছাগল চুরি করেছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা, হুগলি-সহ বিভিন্ন এলাকায় চারচাকা গাড়িতে ঘুরে ঘুরে ছাগল চুরি করেন তাঁরা। ছাগল বিক্রি করে মোটা টাকা আয় করতেন। ধৃতদের সঙ্গে আর কারা জড়িত রয়েছে পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।