পাড়ায় পুলিশ, জালে ভিন্-রাজ্যের চার

ইতিউতি ছড়িয়ে থাকা এলাকাবাসীদের মধ্যেও দেখা গেল আগ্রহ। হঠাৎ পাড়ায় পুলিশ! কেউ কিছু বোঝার আগেই কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা গেল, চার জনকে জিপে তুলল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কুলটি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

অভিযান চালিয়ে এই চার জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বাড়িভাড়া নিয়েছিলেন কয়েক জন। সেখানে অভিযান চালিয়েই আগ্নেয়াস্ত্র-সহ মোট চার জনকে গ্রেফতার করল কুলটি থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই দলটি শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় লুঠপাটের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু পড়শিদের দাবি, বাড়ির পাশেই এমন ‘দুষ্কর্ম’-এর ছক চলছিল, তা টের পাননি তাঁরা।

Advertisement

মঙ্গলবার কী ভাবে চলল অভিযান? সন্ধ্যায় সাতটা নাগাদ কুলটির রানিতলার এক ঘুপচি গলির সামনে দাঁড়াল পুলিশের গাড়ি। ইতিউতি ছড়িয়ে থাকা এলাকাবাসীদের মধ্যেও দেখা গেল আগ্রহ। হঠাৎ পাড়ায় পুলিশ! কেউ কিছু বোঝার আগেই কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা গেল, চার জনকে জিপে তুলল পুলিশ।

পুলিশ জানায়, রাতভর ওই চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পশ্চিম) অলোক মিত্র বলেন, ‘‘ধৃতেরা সকলেই আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতী। বিভিন্ন রাজ্যে এরা ব্যাঙ্ক লুঠ-সহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত।’’ তদন্তকারীরা জানান, ধৃতেরা উত্তরপ্রেদেশের বদাউন জেলার ভোজপুর এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, ওই দলের সঙ্গে যুক্ত দুই মহিলা-সহ তিন জন চম্পট দিয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে মিলেছে, চারটি রিভলভার ও কয়েক রাউন্ড কার্তুজ। বুধবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে সাত দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

Advertisement

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট জানায়, ধৃত এই চার জন সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের মিহিজামে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে লুঠের ঘটনায় জড়িত কি না, তা জানতে ওই রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া পাশের আরও কয়েকটি রাজ্য-পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের শেষে পুলিশের দাবি, ওই দলটির শিল্পাঞ্চলের একাধিক গয়নার দোকান ও ব্যবসায়ীর আড়তে লুঠের পরিকল্পনা ছিল। সে জন্য চম্পট দেওয়া দুই মহিলা-সহ তিন জনের একটি দল এলাকায় ‘রেকি’ও করছিল।

ওই চার জনের ধরা পড়ার খবর চাউর হতেই বিষয়টি নিয়ে বিস্মিত বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, সাত দিন ধরে ওই দলটি পাড়ায় থাকলেও তাদের কাউকেই বাইরে খুব একটা দেখা যায়নি। ধৃতদের হাবভাব বা চালচলনেও সন্দেহজনক কিছু দেখা যায়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের।

কিন্তু জমজমাট এলাকায় এ ভাবে ঘরভাড়া নিয়ে কী ফন্দি আঁটছিল ধৃতেরা? পুলিশ জানায়, এলাকারই এক বাসিন্দাকে কাপড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে ঘরভাড়া নেয়। এক জনের ভোটার পরিচয়পত্রও জমা রাখা হয় বাড়িওয়ালার কাছে। তদন্তে নেমে পুলিশের দাবি, এককালীন ৪০ হাজার টাকা সেলামি ও মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়ার চুক্তিতে ঘরভাড়া নেওয়া হয়। যদিও এই ঘটনা সামনে আসার পরে ভাড়া দেওয়া নিয়ে বাড়ির মালিকেরা কতখানি সচেতন সে প্রশ্নও উঠেছে। পুলিশ জানায়, নিয়ম রয়েছে, ভিন্-রাজ্যের বাসিন্দা হলে বাড়ির মালিকের পুলিশে জানানোর কথা। এ ক্ষেত্রে তা জানানো হয়নি বলেই পুলিশের দাবি। যে বাড়িতে এই দলটি থাকছিল পুলিশ সেই বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই তালা খোলা হবে বলে জানায় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন