‘বালিকা বধূ’কে আটকে রেখে ধৃত

পুলিশ জানায়, মেয়েটির (১২) বাড়ি মেমারির ছিনুই গ্রামে। বাবা মারা যাওয়ার পরে মা ইটভাটায় কাজ করে মেয়েকে বড় করেন। স্থানীয় স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ওই কিশোরী। বুধবার বিনয়পল্লির গণেশের (৩০) সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৬
Share:

ধৃত স্বামী গনেশ। নিজস্ব চিত্র

একে নাবালিকাকে বিয়ে, তার উপরে তাকে বাড়িতে আটকে রাখা— দুই অভিযোগে এ বার ‘স্বামী’কে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে মেমারি পুর-শহরের বিনয়পল্লি থেকে ওই ‘বালিকা বধূ’কে উদ্ধার করে পুলিশ ও চাইল্ড লাইন। শুক্রবার বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয় সে। বর্ধমান আদালতে শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত মামলার বিচারের জন্য গঠিত বিশেষ এজলাসের বিচারক
এ দিন কিশোরীর স্বামী, শ্বশুরের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনে মামলা করার নির্দেশ দেন। আজ, শনিবার শিশুকল্যাণ কমিটির কাছে ওই নাবালিকাকে পেশ করা হবে। সে এখন চাইল্ড লাইনের হোমে রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “চাইল্ড লাইনের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নাবালিকার স্বামী গণেশ রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের বাবা গোবিন্দ রায়ের খোঁজ চলছে।” চাইল্ড লাইনের বর্ধমানের কো-অর্ডিনেটর অভিষেক বিশ্বাস বলেন, “সাধারণত আমরা বাড়ির লোককে বুঝিয়ে বিয়ে রুখি। এই প্রথম আইন মেনে এফআইআর করেছি। যাতে ওই নাবালিকাকে বিয়ে করে অবৈধ ভাবে আটকে রাখার মাসুল গুনতে হয় শ্বশুরবাড়িকে।’’

Advertisement

পুলিশ জানায়, মেয়েটির (১২) বাড়ি মেমারির ছিনুই গ্রামে। বাবা মারা যাওয়ার পরে মা ইটভাটায় কাজ করে মেয়েকে বড় করেন। স্থানীয় স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ওই কিশোরী। বুধবার বিনয়পল্লির গণেশের (৩০) সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে হয়। বৃহস্পতিবার বিনয়পল্লি থেকেই কেউ চাইল্ড লাইনে ফোন করে জানান, এলাকায় নাবালিকাকে বিয়ে করে আনা হয়েছে। সে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে না চাওয়ায় জোর করে ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। ঠিকানা খুঁজে রাতে মেমারি থানায় পৌঁছন চাইল্ড লাইনের সদস্যরা। পুলিশ নিয়ে প্রথমে ছিনুই গ্রামে গিয়ে মেয়ের মাকে সঙ্গে নিয়ে বিনয়পল্লিতে আসেন তাঁরা।

এ দিন ওই নাবালিকা আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে বলে, “বিয়েতে রাজি ছিলাম না। জোর করে বিয়ে দিয়েছে।” পূর্ব বর্ধমান জেলায় কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরীর আশ্বাস, সে ফের স্কুলে যাবে।কন্যাশ্রীরা তাকে আগলে রাখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন