‘শিকারে’র খোঁজ দিত আরিফুল

গত ২২ অগস্ট মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার একপাহারিয়ার বাসিন্দা আসরাফ মল্লিকের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজুরের বাসিন্দা আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

কাউকে এয়ারপোর্ট, কাউকে পুলিশে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন এক মহিলা-সহ দুই যুবক। তদন্তে নেমে অভিযুক্ত যুবক, যুবতীর সম্পর্কে আরও তথ্য পেয়েছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, এক অভিযুক্তের বাবা ছেলের বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা, প্রয়োজনীয় নথি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন রাজারহাট থানায়।

Advertisement

গত ২২ অগস্ট মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার একপাহারিয়ার বাসিন্দা আসরাফ মল্লিকের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজুরের বাসিন্দা আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করে তাঁর দুই সঙ্গী উত্তর চব্বিশ পরগনার নিউটাউন রাজারহাটের বাসিন্দা সায়ন্তন মুখোপাধ্যায় ও পল্লবী সিংহ চৌধুরীকে ধরে পুলিশ। উদ্ধার হয় একাধিক ব্যাঙ্কের পাসবই ও নানা নথি।

পুলিশের দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে স্নাতকোত্তর পাশ করার পরে দিল্লিতে থাকার নামে বছর তিনেক ধরে বাড়িছাড়া সায়ন্তন। সে এমবিএ করেছে বলেই পুলিশের কাছে দাবি করেছে। পল্লবীও সাংবাদিকতায় স্নাতক। পুলিশ জেনেছে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই আলাপ সায়ন্তন ও পল্লবীর। কখনও চাকরি ক্ষেত্রে সমস্যা সামলানোর অছিলায়, কখনও দিল্লিতে নতুন ব্যবসা করার নামে বাবা-মায়ের উপর চাপ দিয়ে টাকা ‘আদায়’ করত সে।

Advertisement

গত ২২ জুন রাজারহাট থানায় লিখিত অভিযোগে সায়ন্তনের বাবা, বছর আটষট্টির উৎপল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আমার চাকরি ও স্ত্রীর উত্তরাধিকার সত্রে প্রাপ্ত ৪০ লক্ষ টাকা আগেই আত্মসাৎ করেছে ছেলে। হাওড়ার বার্ন স্ট্যান্ডার্ড থেকে অবসর নিলেও ছেলে সব কেড়ে নেওয়ায় নিঃস্ব হয়ে এখন একটি কাপড় তৈরির কারখানার দৈনিক মজুরিতে কাজ করত বাধ্য হচ্ছি’। তাঁর অভিযোগ, ১৭ অগস্ট লালবাজার থানার পুলিশ পরিচয়ে একটি ছেলে বাড়িতে এসে তাঁকে গাড়িতে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। যদিও পড়শিদের বাধায় তা সফল হয়নি। এই ঘটনার দিন দুয়েক আগে ‘প্রাণ সংশয় ও বর্ধমানে আটকে আছি’ জানিয়ে সায়ন্তন তাঁকে ফোন করে দু’লক্ষ টাকা নিয়ে যাওয়ার চাপ দেয় বলেও অভিযোগ। উৎপলবাবুর দাবি, বছরখানেক আগেও একই কায়দায় সায়ন্তন ও পল্লবী বাড়িতে চড়াও হয়ে প্রায় তিন লক্ষ টাকা, আধার কার্ড, ভোটার কার্ডের মতো জরুরি নথি কেড়ে নিয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্প পেপারে সই করতে বাধ্য করে।

কেতুগ্রাম থানার পুলিশ জানায়, মামারবাড়ি ঘুরতে গিয়ে ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল রাজুরের আরিফুল ইসলামের সঙ্গে আলাপ হয় অভিযোগকারী আসরফের। স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পাঠরত আসরফকে এয়ারপোর্টে চাকরি করিয়ে দেওয়ার নাম করে আরিফুল ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ। আসরফের দাবি, ‘‘ওদের কথা মতো দিল্লির মহিপালপুরে ন’মাস গিয়ে থেকেছিলাম। একটি বেসরকারি সংস্থায় অস্থায়ী সুপারভাইজারের কাজ দিয়েছিল। কিন্তু এয়ারপোর্টে চাকরি পাইনি।’’ পরে রাজুর ও সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামের অনেকের কাছেই চাকরির নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ সামনে আসে। পুলিশ জানতে পেরেছে, সায়ন্তন ও পল্লবীকে ‘শিকারের’ খোঁজ দিত আরিফুল। ধৃতদের শুক্রবার ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় কাটোয়া আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন