ট্রাক নিয়ে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র।
দিন দুয়েক আগেই পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা চাওয়ার অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন ট্রাক মালিকেরা। এ বার রাস্তা অবরোধও করলেন তাঁরা। ঘটনায় ফের সামনে এল পুলিশ-প্রশাসনের ‘ভুল বোঝাবুঝি’।
বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা নাগাদ চরখি, খাঁয়েরহাট, নতুনগ্রামের লরিচালকরা শ’দেড়েক বালিবোঝাই লরি নিয়ে সিপাইদিঘির মোড়ে পথ অবরোধ করেন। ওই ট্রাক মালিকদের অভিযোগ, নথিপত্র দেখিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ বালি নিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও পুলিশ ট্রাক আটকে তোলা চাইছে। নাহলে মিথ্যে মামলায় নাম জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে ট্রাক চালকদের একাংশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে দু’জন ট্রাক চালক আহত হন বলেও দাবি ট্রাক মালিক ভানু শেখ, রুবেল শেখদের। ট্রাক চালকদের অভিযোগ, বুধবার রাতে ন’নগর পেট্রোলপাম্প লাগোয়া এলাকায় রাত পাহারায় থাকা কয়েকজন পুলিশ বালিবোঝাই ট্রাক থেকে টাকা চায়। না দিতে চাইলে টায়ার খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে, হাওয়া খুলে দেওয়া হয় বলেও তাঁদের অভিযোগ। নওশাদ শেখ, আলাউদ্দিন শেখদের অভিযোগ, ‘‘২২০ সিএফটি বালি নিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও পুলিশ টাকা চাইছে। না দিতে চাইলে নানারকম ভয় দেখাচ্ছে।’’
তবে টাকা চাওয়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, রাতের গোলমাল পুরোটাই হয়েছে প্রশাসনের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝি’তে। পুলিশকর্মীরা জানান, রাতে কয়েকটি অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক আটক করেছিলেন তাঁরা। ঝামেলা বাধার আশঙ্কায় রাতেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ও মহকুমাশাসককে জরিমানা আদায়ের জন্য আধিকারিক পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু প্রশাসন কোনও আধিকারিক না পাঠানোয় গন্ডগোল বাধে। কাটোয়ার এসডিপিও শচিন মাঁকড় বলেন, ‘‘অবরোধের সময়ও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে জানানো হয়। তখন না এসে বেলা ১১টায় ওই দফতরের প্রতিনিধি সিপাইদিঘি এসে পৌঁছন।’’ তবে কাটোয়া ১ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দেবাশিস বিশ্বাসের দাবি, ‘‘রাতে অফিসে কর্মী না থাকায় পাঠানো যায়নি। এ দিন পাঁচটি চালান যাচাই করে দেখি সেগুলো সঠিক পরিমানেই বালি বহন করছে।’’
কয়েকদিন আগেই চরখি ঘাটে অভিযান চালাতে গিয়ে চারটি মাটি কাটার যন্ত্র আটক করেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা। কিন্তু নজরদারির অভাবে স্থানীয়রা নিয়ে পালান একটি যন্ত্র। অভিযানে পুলিশের না থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সে সময় পুলিশ দাবি করে, তাদের প্রশাসনোর তরফে জানানো হয়নি। পাল্টা জানানো সত্ত্বেও পুলিশের না আসার কথা বলে প্রশাসন। এ দিনের ঘটনায় পুলিশের দাবি, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা সময়ে জরিমানা আদায় করতে না আসায় গোলমাল বাধে।
মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘মঙ্গলকোটের তিনটি ঘাট বৈধ। তাই চালান যাচাইয়ের দায়িত্ব ওই ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধকারিকের। উনি কেন কর্মী পাঠাননি খোঁজ নেব।’’ বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন মঙ্গলকোট ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধকারিক রূপবিলাস মণ্ডল।