বোমায় জখম পুলিশ

দুষ্কৃতীকে জাপ্টে ধরতেই বিপত্তি

পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলেন্টিয়ারেরা ঘিরে রয়েছেন। খালি গায়ে, লুঙ্গি পরা এক দুষ্কতী পুলিশের দিকে পিস্তল তাক করে। পুলিশ দু’পা এগোতেই শূন্যে গুলি ছোড়ে ওই যুবক। পুলিশ থমকে যায়। এই ভাবে কেটে যায় বেশ কিছুক্ষণ। হঠাৎ ওই দুষ্কৃতী পিছু হটে পালাতে গেলেই পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলেন্টিয়ারেরা তাকে পিছন দিক থেকে জাপটে ধরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০২:১২
Share:

ধৃত রবি সিংহ। নিজস্ব চিত্র

পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলেন্টিয়ারেরা ঘিরে রয়েছেন। খালি গায়ে, লুঙ্গি পরা এক দুষ্কতী পুলিশের দিকে পিস্তল তাক করে। পুলিশ দু’পা এগোতেই শূন্যে গুলি ছোড়ে ওই যুবক। পুলিশ থমকে যায়। এই ভাবে কেটে যায় বেশ কিছুক্ষণ। হঠাৎ ওই দুষ্কৃতী পিছু হটে পালাতে গেলেই পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলেন্টিয়ারেরা তাকে পিছন দিক থেকে জাপটে ধরে। তাতেও বিপত্তি। দুষ্কৃতীর কাছে থাকা বোমা রাস্তায় পড়ে ফেটে যায়। তাতে ওই দুষ্কৃতী তো বটেই, এক এএসআই-সহ পাঁচ পুলিশ ও সিভিককর্মী এবং এলাকার এক জনও জখম হন।

Advertisement

রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ এ রকম নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল মেমারির পালশিট বাজার। বোমায় আহতদের মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুষ্কৃতী রবি সিংহের বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডালে। বর্তমানে সে হুগলির ব্যান্ডেলে থাকে। তার বিরুদ্ধে ওই দুই জেলাতেই পুলিশের খাতায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। নানা অপরাধের জন্য বেশ কয়েক বার জেলও খেটেছে। পুলিশের দাবি, পালশিটে রবির মামাবাড়ি। কিছুদিন আগে একটি জমি নিয়ে তার দিদিমার সঙ্গে এক পড়শির গোলমাল হয়। ওই পড়শি দিদিমাকে চড়ও মারেন বলে অভিযোগ। সেই সূত্রেই রবির পালশিটে আসা বলে পুলিশ জেনেছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই পড়শিকে ‘শায়েস্তা’ করার নামে গোটা বাজারেই তাণ্ডব চালাচ্ছিল রবি।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দু’দিন ধরে বোমা-গুলি নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল ওই দুষ্কৃতী। কেউ কিছু বলতে গেলেই বোমা ছোড়ার হুমকি দিচ্ছিল। মদ্যপ অবস্থায় প্রকাশ্যে বোমা-পিস্তল নিয়ে ঘুরে বেড়ানোয় এলাকাবাসীও তাকে ঘাঁটাতে চাননি। পুলিশ জেনেছে, শনিবার দুপুরে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা চেয়ে হুমকি দিতে থাকে রবি। এক ব্যবসায়ী তিন হাজার টাকা তোলা দিতে অস্বীকার করলে তাঁর মাথায় বন্দুকও ঠেকায়। পালশিট পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেওয়া হয়। বিকেলেই পুলিশ বাজারে চলে আসে। কিন্তু ওই দুষ্কৃতী বোমা-পিস্তল নিয়ে তেড়ে আসছে দেখে পুলিশ তখনকার মত পিছু হটে। রবিবার সকালে পুলিশ ফের পালশিট বাজারে যায়।

Advertisement

এক পুলিশকর্মীর কথায়, “ওই দুষ্কৃতী বাজারেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আমরা তাকে ঘিরে ফেলি। সেটা বুঝতে পেরেই আমাদের দিকে পিস্তল তাক করে।” ব্যবসায়ীদের দাবি, রবি ওই সময় শূন্যে গুলিও ছোড়ে। শেষে বেগতিক বুঝে সে পিছু হটতে গেলে বাজার লাগোয়া সেচখালের ধারে পুলিশকর্মীরা তাকে জাপটে ধরেন। তখনই তার কাছে থাকা একটি বোমা ফেটে যায়। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এ রকম ঘটনা আগে ঘটেনি। ভাগ্নে বোমা-গুলি নিয়ে তাণ্ডব চালাবে—এমনটা ভাবতে পারেনি মামাবাড়িও। রবিব দিদিমা আদুরি সিংহ বলেন, ‘‘নাতির জন্য মুখ পুড়ল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন