বালি পাচার বন্ধে জেলায় অভিযান

নজরদারি আরও জোরদার করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ইতিমধ্যেই গোটা জেলা জু়ড়ে আড়াইশোরও বেশি বালি খাদানে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নজর মিনার কোথায় কোথায় তৈরি করা যায়, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান প্রশাসনের এক কর্তা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৯
Share:

বালির এই গাড়িগুলিই আটক করা হয়েছে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধান। বালি খাদানে যে ‘লুঠ’ চলছে, তা নিয়ে বৃহস্পতিবারই প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে, শুক্রবার বালি পাচার রুখতে রাতভর অভিযান চালাল পুলিশ। জেলা পুলিশ কর্তারা জানান, প্রায় দে়ড়শোরও বেশি বালির গাড়ি আটক করা হয়েছে। বালি পাচারে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৩ জনকে।

Advertisement

প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বালি পাচার রুখতে উপযুক্ত নজরদারির অভাবকে দায়ী করেন। সেই সঙ্গে খাদানে ঢোকা ও বেরনোর পথে সিসিটিভি বসানো, নজর মিনার তৈরিরও দাওয়াই দিয়েছিলেন। পাচার রুখতে পুলিশকে আরও সক্রিয় হওয়ারও বার্তা দিয়েছিলেন। আর তার পরেই শুক্রবার এমন অভিযান আসলে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ‘ফল’, দাবি প্রশাসনের এক কর্তার। পুলিশ জানায়, খণ্ডঘোষে সাত, মঙ্গলকোট ও জামালপুরে ছয় জন করে, কালনা ও মেমারিতে পাঁচ জন করে, পূর্বস্থলী ও কাটোয়া দুই জন করে, মাধবডিহিতে ১৫ ও গলসিতে ২৫ জনকে বালি পাচারে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বর্ধমান, কাটোয়া ও কালনা আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারকেরা তাঁদের জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

শনিবার পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “নিয়মিত ভাবে বালির গাড়ির পরীক্ষা করা হয়। গত কয়েক দিন ধরে অভিযোগ মিলছিল। তার ভিত্তিতেই বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে।” পুলিশ জানায়, অতিরিক্ত বালিবোঝাই, নির্দিষ্ট নথি না থাকা ও কেন্দ্রীয় পরিবেশ দফতরের আইন না মানার অভিযোগে পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে বালির গাড়িগুলিকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে।

Advertisement

প্রধানত কী কী অনিয়ম নজরে এসেছে? জেলা পুলিশের কর্তারা জানান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চালানে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সই বা সরকারি স্ট্যাম্প নজরে পড়েনি। পুলিশের দাবি, রাজস্ব ফাঁকি দিতে ‘ভুয়ো’ চালান দিয়েই বালির গাড়ি যাতায়াত করে। প্রসঙ্গত, প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীও বলেছিলেন, ‘‘খাদান থেকে দশ লরি বালি তোলার কথা, অথচ উঠে যাচ্ছে ২০ লরি বালি।”

নজরদারি আরও জোরদার করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ইতিমধ্যেই গোটা জেলা জু়ড়ে আড়াইশোরও বেশি বালি খাদানে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নজর মিনার কোথায় কোথায় তৈরি করা যায়, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান প্রশাসনের এক কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন