TMC-BJP Rift

আলু চাষের মরসুমে পঞ্জাব-বীজে ভরসা চাষিদের, রাজ্যে উৎপাদন ঘিরে তরজা তৃণমূল-বিজেপির

রাজ্যের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে তিনটি জায়গায় বীজ উৎপাদন শুরু হয়েছে বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলামের দাবি, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই আলু বীজ উৎপাদনে রাজ্য পুরোপুরি স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:২৮
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

মাঠে আলু বসানোর ভরা মরসুমে চাষিদের ভরসা সেই পঞ্জাবি-বীজেই। পূর্ব বর্ধমানে শুরু হয়েছে পঞ্জাব থেকে আলুর বীজ বোঝাই লরির আনাগোনা। হুগলির পর রাজ্যে আলু উৎপাদনে সর্বদা শীর্ষে থাকে এই জেলা। পূর্ব বর্ধমান জেলার চাষিদের বড় অংশের দাবি, পঞ্জাবের আলু বীজে ভরসা করা যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফলন স্থির থাকে। তাই পঞ্জাবের জালন্ধরের বীজই তাঁদের প্রথম পছন্দ। এ বিষয়ে শাসক দল ও বিরোধী দলের মধ্যে শুরু হয়েছে তরজাও। বিজেপির একাংশের দাবি, কালোবাজারি হয় সবই। তাই কৃষকেরা পঞ্জাবের আলু বীজের উপর বেশি ভরসা করেন।

Advertisement

রাজ্যের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে তিনটি জায়গায় বীজ উৎপাদন শুরু হয়েছে বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলামের দাবি, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই আলু বীজ উৎপাদনে রাজ্য পুরোপুরি স্বনির্ভর হয়ে উঠবে। তাঁর কথায়, “৩ লক্ষ টন আলু বীজ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েই কাজ চলছে। ২০১৭ সাল থেকে ‘পেরু ইন্টারন্যাশনাল পটেটো রিসার্চ সেন্টার’-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রাজ্যে আলু বীজ উৎপাদন শুরু হয়েছে। এর জন্য ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।” ইতিমধ্যেই কৃষ্ণনগর, পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দনগর ও জলপাইগুড়ির মোহিতনগরে আলু বীজ উৎপাদন কেন্দ্র কাজ শুরু করেছে বলে জানান বাগবুল।

তবে, বিজেপির একাংশের দাবি, কালোবাজারি হয় সবই। তাই কৃষকেরা পঞ্জাবের আলু বীজের উপর বেশি ভরসা করেন। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের অভিযোগ, “রাজ্য সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের ভরসা নেই। আলু বীজ উৎপাদনের দাবি আসলে ভাঁওতাবাজি। তাই মানুষ রাজ্য সরকারের বীজ পছন্দ করছে না।”

Advertisement

অন‍্য দিকে, বাজারে এ বার তুলনামূলক ভাবে আলু বীজের দাম অনেক কম। গত বছর এই সময় পঞ্জাবি-বীজের দাম ছিল প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে। এ বছর সেই বীজই মিলছে প্রায় অর্ধেক দামে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির বর্ধমান সদর ইউনিটের সম্পাদক উত্তম পাল বলেন, “এখন পঞ্জাবি-বীজ ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম অনেকটাই কম।”

তবে বীজের দাম কমলেও বৃদ্ধি পেয়েছে সারের মূল্য। ফলে উৎপাদন খরচ নিয়ে চিন্তায় চাষিরা। আলু চাষি শেখ কালাম আলি ও স্বপন ঘোষের বক্তব্য, “বীজে সাশ্রয় হলেও সার-সেচ-শ্রমিকের খরচ বাড়ার ফলে সামগ্রিকভাবে আলু চাষ লাভজনক থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।” এই বছর আলু উৎপাদন লাভজনক হবে কি না, এখন সে দিকেই কার্যত তাকিয়ে আলুচাষিরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement