কিছু দিন ধরেই পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন মুর্শিদাবাদের সালারের মনিরা বিবি। চিকিৎসকদের পরামর্শে কাটোয়া পুরসভা পরিচালিত বিসি রায় পলিক্লিনিকে সিটি স্ক্যান করাতে এসে জানতে পারলেন, এখন তা হবে না। গত পাঁচ মাস ধরে সিটি স্ক্যান, ডিজিটাল এক্স-রে, ইউএসজি করার যন্ত্র বিকল থাকায় এ ভাবেই ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন পুরসভারই এক কাউন্সিলর।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ওই পলিক্লিনিকে তৈরি হয়। ২০০০ সালে তা নব কলেবরে সার্কাস ময়দানে স্থানান্তরিত হয়। ওই কেন্দ্রে প্যাথোলজি ও রেডিওলজির নানা পরিষেবা দেওয়া হয়। ফি দিন সেখানে ১২০ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এই পলিক্লিনিকটির উপরে নির্ভর করেন কাটোয়া, কেতুগ্রাম, দাঁইহাট, মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ।
কিন্তু পাঁচ মাস ধরে ওই ক্লিনিক থেকে কার্যত কোনও পরিষেবাই মিলছে না বলে জানান রোগীরা। কেন? পলিক্লিনিকের কর্মী অমরেশ দে, কল্যাণকুমার সাহারা জানান, সিটি স্ক্যান যন্ত্রের টিউব, ইসিজি যন্ত্র, ডিজিটাল এক্স-রে যন্ত্রটি বেশ কয়েক মাস ধরে বিকল। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনটির জন্য একটি যন্ত্রাংশ মাসখানেক ধরে মিলছে না বলে তাঁদের দাবি।
এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি পলিক্লিনিকে গিয়ে বেশি টাকায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হচ্ছে বলে জানান রোগীরা। নাসিরা বিবি নামে এক রোগী জানান, পুরসভার ক্লিনিকটিতে তলপেটের সিটি স্ক্যানের খরচ পড়ে আটশো টাকা। সেখানে বেসরকারি ক্লিনিকে খরচ হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। ডিজিটাল এক্স-রে করাতে পুরসভার পলিক্লিনিকে খরচ ১১০ টাকা। বাইরে তা ১৫০ টাকার কমে হচ্ছে না। পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ভাস্কর মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এ ভাবে দীর্ঘ দিন ধরে পলিক্লিনিকটি কার্যত অকেজো হয়ে পড়ায় রোগীদের ভোগান্তি হচ্ছে। পুরসভার আয়ও মার খাচ্ছে।’’ শুধু তাই নয়, সুযোগ বুঝে বেসরকারি ক্লিনিকগুলি পরীক্ষার জন্য দরও বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ।
পলিক্লিনিকটির দায়িত্বপ্রাপ্ত আবুল হাসান আলি বলেন, ‘‘যন্ত্রগুলির সারাই ও সংস্কারের জন্য পুরসভাকে জানিয়েছি। দরপত্র ডাকা হয়েছে বলে শুনেছি। সিটি স্ক্যানের যন্ত্রটি সারানোর জন্য মিস্ত্রিও এসেছিলেন।’’ পুরসভার বোর্ড মিটিংয়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছ বলে জানান তিনি। দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান অমর রাম। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি।