পোস্টাল ব্যালট না পেয়ে চিঠি কমিশনে

আর কয়েকদিন পরে হার-জিত জেনে যাবেন প্রার্থীরা। অথচ ভোটের দায়িত্ব যাঁদের উপর ছিল, তাঁরাই এখনও ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৬ ০১:৫৪
Share:

আর কয়েকদিন পরে হার-জিত জেনে যাবেন প্রার্থীরা। অথচ ভোটের দায়িত্ব যাঁদের উপর ছিল, তাঁরাই এখনও ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ।

Advertisement

বিরোধীরা তো বটেই, বহু সরকারি কর্মীও অভিযোগ করেছেন, বর্ধমান জেলার বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের কয়েকশো ভোটকর্মীর হাতে এখনও পোস্টাল ব্যালট পৌঁছায়নি। এমনকী, ১২সি ফর্ম পূরণ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দেওয়ার পরেও পোস্টাল ব্যালট পাননি বলে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে মেল পাঠিয়েছেন কাটোয়ার কয়েকজন ভোটকর্মী। তাঁদের প্রশ্ন, গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে নিজেদের অধিকার থেকেই কী বঞ্চিত হবেন তাঁরা? এর সঙ্গেই ওই চিঠিতে কাদের জন্য এই সমস্যা হল, তা খুঁজে বের করে সেই সব কর্মীদের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতার’ জন্য শাস্তি দেওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন কর্মীরা।

প্রশাসনের কাছেও নির্দিষ্ট উত্তর নেই। কাটোয়ার মহকুমাশাসক মৃদুল হালদার বলেন, “আমাদের কাছে এ নিয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।” জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আমাদের দফতর থেকে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে কি না দেখা দরকার। তারপর ডাক বিভাগে খোঁজ নিতে হবে। কারণ আমরা ব্যালট পেপার ডাকঘরের মাধ্যমেই পাঠিয়ে থাকি।’’

Advertisement

নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সরকারি বা আধা-সরকারি কর্মী নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ভোটের কাজে গেলে ‘ইলেকশন ডিউটি সার্টিফিকেট’ পান। সেই শংসাপত্র দেখিয়ে তিনি যে বুথে রয়েছেন, সেখানেই ভোট দিতে পারেন। কিন্তু অন্য বিধানসভা এলাকায় গেলে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে হয় তাঁদের। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক থেকে গাড়ির চালক, সবাই পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেন। অথচ বর্ধমান জেলার গ্রামীণ এলাকায় ২১ এপ্রিল ভোটের কাজে নিযুক্ত ছিলেন, এমন কয়েকশো ভোট কর্মীর হাতে ব্যালট পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ। এর আগে দুর্গাপুর, কালনাতেও পোস্টার ব্যালট না পেয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন সরকারি কর্মীরা।

কাটোয়ার ভোটকর্মী শুভাশিস মণ্ডল, প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়দের মতো বেশ কয়েকজনের ক্ষোভ, “মহকুমাশাসককে বিষয়টি জানানোর পরেও আমরা ব্যালট পাইনি।” বর্ধমান শহরের সত্যনারায়ণ সাহা, আনন্দ দাসদের কথায়, “কোনও বার তো এরকম হয়নি, এ বার কেন হল বুঝতে পারছি না।” প্রত্যেকেই দাবি করেছেন, ভোটের প্রশিক্ষণের সময় নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন। তারপরেও পোস্টাল ব্যালট মেলেনি। জেলা প্রশাসনের আবার দাবি, ডিসিআরসিতেও আবেদনপত্র জমা নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কাউন্টার খোলা হয়েছিল।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেরও অভিযোগ, অতীতে পোস্টাল ব্যালট নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছিল। পোস্টাল ব্যালট কেড়ে নেওয়া থেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ জমা পড়ত নির্বাচন কমিশনের কাছে। পরে নিয়ম হয়, প্রশিক্ষণের শেষ দিনেই পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান পর্ব সেরে ফেলতে হবে। সেই নিয়ম পুরোপুরি মানা হয়নি বলে অভিযোগ ভোটকর্মীদের একাংশের। কাটোয়ার তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পোস্টাল ব্যালট অনেক ভোটকর্মী পাননি। তাঁরা কেন পেলেন না তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকারেরও দাবি, “এর মধ্যে অন্য কোনও বিষয় আছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনের খুঁজে বের করা দরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন