Coronavirus

ধর্মস্থান খোলার প্রস্তুতি, সতর্ক সব পক্ষই

গত শুক্রবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘোষণার পাশাপাশি, জানিয়েছিলেন, ধর্মীয় স্থান খুললেও সেখানে জমায়েত বা অনুষ্ঠান করা যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২০ ০৪:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চতুর্থ দফার ‘লকডাউন’ শেষের পরের দিন, অর্থাৎ, কাল, সোমবার থেকে ধর্মীয় স্থানগুলি খোলা যাবে বলে জানিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে জেলার বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানের কর্তৃপক্ষ জানান, উপযুক্ত বিধি মেনেই মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বার প্রভৃতি খোলা হবে।

Advertisement

গত শুক্রবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘোষণার পাশাপাশি, জানিয়েছিলেন, ধর্মীয় স্থান খুললেও সেখানে জমায়েত বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। এক সঙ্গে দশ জনের বেশি ধর্মীয় স্থানে ঢোকা যাবে না। এর অন্যথা হলে, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।

কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের অন্যতম সেবাইত মিঠু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্দির খোলাই ছিল। নিত্য পুজোও হয়েছে। ভক্তেরা এখন যদি আসেন, তা হলে তাঁদের ‘মাস্ক’, দস্তানা পরে আসতে হবে। মন্দিরের ভিতরে এমনিতেই তিন-চার জনের বেশি দাঁড়াতে পারেন না। ফলে, সামাজিক দূরত্ববিধি স্বাভাবিক ভাবেই রক্ষিত হয়। প্রতিদিনই মন্দির চত্বর সাফ করা হয়। জীবাণুনাশকও ছড়ানো হয়।’’

Advertisement

একই কথা জানান মুক্তাইচণ্ডী মন্দির কমিটির সভাপতি অশোক ঘোষ, ঘাগরবুড়ি মন্দিরের উন্নয়নের কাজে যুক্ত ‘কালীপাহাড়ি ধর্মচক্র সেবা সমিতি’র সভাপতি রূপেশ সাউয়েরা। দু’জনেই জানান, সরকারের নির্দেশ মতো মন্দির চত্বরে দশ জনের বেশি ভক্তকে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি, ভক্তদের দাঁড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট দূরত্বে জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান রূপেশবাবু। পুরোহিতেরাও ‘মাস্ক’ পরেই থাকবেন বলে জানানো হয়। ইতিমধ্যেই মন্দির চত্বর জীবাণুমুক্ত করেছে দুর্গাপুর পুরসভা, জানিয়েছেন দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি কালীবাড়ির প্রধান সেবাইত সাধনকুমার রায়। মন্দিরের নিরাপত্তারক্ষীরা ভক্তেরা যাতে সামাজিক দূরত্ববিধি রক্ষা করেন, তা দেখবেন। পাশাপাশি, এখানে ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’ ও সাবানের ব্যবস্থাও থাকছে বলে সাধনবাবু জানান।

সেই সঙ্গে, সরকারি নির্দেশিকা মেনে দশ জনের বেশি প্রবেশ নিষেধ, প্রত্যেককে হাত, পা, মুখ জল দিয়ে ধোয়া, ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’ ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জামুড়িয়া বাজার এলাকার জামা মসজিদের ইমাম আব্দুল ওয়াহিদ। ‘মাস্ক’ পরে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নমাজ পড়া হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি, রানিগঞ্জের রনাই হজরত সামসুদ্দিন রহমতুল্লা আলেয়হে পীর সাহেবের মাজার চত্বর লাগোয়া মসজিদে বহু মানুষ নমাজ পড়তে আসেন। ওই মসজিদ কমিটির তরফে নাসিম খান বলেন, ‘‘জীবাণুনাশক ছড়ানো হবে। সরকারি নির্দেশিকা পুরোপুরি মেনে চলা হবে।’’

এ দিকে, আসানসোলের একটি গির্জার তরফে যোসেফ পিটার জানান, এমনিতেই তাঁদের সমস্ত ধর্মীয় কাজকর্ম ‘অনলাইন’-এ চলছে। ১ জুন থেকে গির্জা খোলার বিষয়ে তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও বার্তা আসেনি। যদিও রানিগঞ্জের গির্জাপাড়ার ওয়েসলিয়ান মেথোডিস্ট চার্চের রেভারেন্ড রবীন্দ্রনাথ রায় জানান, মূলত রবিবার সকলের জন্য প্রার্থনাসভা আয়োজিত হয়। প্রায় একশোরও বেশি মানুষের সমাবেশ হয়। সরকারি নির্দেশিকা সব মেনে চলা হবে বলে জানান তিনি।

পাশাপাশি, রানিগঞ্জ গুরুদ্বারের সভাপতি হরজিৎ সিংহ জানান, শিখেরা ‘নানকশাহি’ বর্ষপঞ্জি অনুসারে, প্রতি মাসের প্রথম দিন ভিড় করেন গুরুদ্বারে। ‘নানকশাহি’ বর্ষপঞ্জিতে নতুন মাসের প্রথম দিন হবে জুনের মাঝামাঝি। ওই দিন, দশ জন করে প্রার্থনা করা, ‘মাস্ক’ পরা, ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’-এর ব্যবস্থা করার কথা জানান হরজিৎবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন