—ফাইল চিত্র।
বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে বহিষ্কৃত ১১ জন পড়ুয়াকে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হতেই ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠি দিলেন মেমারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তী। ওই কলেজের প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) অনির্বাণ কোলেকে মঙ্গলবার রাতে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
মেমারি কলেজে ছাত্র-অসন্তোষের সময়েও অধ্যক্ষ ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন। তবে তৎকালীন পরিচালন সমিতি তা গ্রহণ করেনি। মঙ্গলবারের চিঠিটি অবশ্য গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহকুমাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ রামপুরহাট কলেজ থেকে লিয়েন নিয়ে মেমারি কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। ২৮ নভেম্বর তার সময়সীমা শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে তিনি চিঠিতে জানিয়েছেন। আমরা এ মাসেই তাঁকে ছেড়ে দেব।’’
কলেজ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ, মারধর, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে টিএমসিপি-র মেমারি ১ ব্লক সভাপতি তথা মেমারি কলেজের শিক্ষাকর্মী মুকেশ শর্মার স্ত্রী-সহ ১৩ জনকে ‘শো-কজ’ করা হয়েছিল। দু’জন ছাড়া বাকিরা তার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন পর্যন্ত বোধ করেননি। সে জন্য মহকুমাশাসকের নির্দেশে ১১ জন পড়ুয়াকে ‘বহিষ্কার’ করেন দেবাশিসবাবু। তার আগে আংশিক সময়ের শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতা রবিন মজুমদার ও শিক্ষাকর্মী মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধেও তিনি ব্যবস্থা নেন।
কলেজের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে শাসকদলের একাংশের বিরাগভাজন হয়েছিলেন অধ্যক্ষ। ১১ জনকে বহিষ্কারে তা আরও বাড়ে। জেলাশাসক এবং মহকুমাশাসকের কাছে বহিষ্কৃতদের ফেরানোর জন্য অনুরোধ করা হয় শাসকদলের তরফে। দলের প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক ও জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত প্রশাসনের কাছে ওই পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ক্ষমা করার আর্জি জানান।
কলেজের প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘ওই পড়ুয়ারা নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করলে তাঁদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কলেজে ফেরানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে দু’জন পড়ুয়া সেই আবেদনও করেছে।’’ এরই মধ্যে অধ্যক্ষ পদত্যাগ করতে চাওয়ায় বিরোধীদের অভিযোগ, শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করেও শাসকদলের চাপে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। যদিও শাসকদলের নেতারা কোনও রকম চাপের কথা মানতে চাননি। অধ্যক্ষ দেবাশিসবাবুর বৃহস্পতিবার শুধু বলেন, ‘‘আমি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। এখন কথা বলার অবস্থায় নেই।’’