নিহত জওয়ানের বাবা-মায়ের সঙ্গে সংস্থার কর্তারা। নিজস্ব চিত্র
ছেলের ইচ্ছা ছিল পাকা বাড়ি বানানোর। কিন্তু সেই ইচ্ছাপূরণ হয়নি। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন নদিয়ার তেহট্টের হাঁসপুকুরিয়ার বাসিন্দা সিআরপি জওয়ান সুদীপ বিশ্বাস (২৭)। তবে জওয়ানের সেই ইচ্ছার কথা সংবাদমাধ্যম মারফত জানতে পেরে এগিয়ে এল পশ্চিম বর্ধমানের একটি আবাসন সংস্থা।
পরিবারের সূত্রে জানা যায়, গত বছর ডিসেম্বরে সুদীপ বাড়ি এসেছিলেন। বিয়ের কথাবার্তাও অনেকটা এগিয়েছিল। সেই সময়ে একটি পাকা ঘর, শৌচাগার তৈরির কাজও শুরু হয়েছিল। চলতি বছর লম্বা ছুটিতে এসে বাড়ির বাকি কাজ শেষ করার কথা ছিল সুদীপের। জঙ্গি-হামলায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতেই এগিয়ে এসেছে পশ্চিম বর্ধমানের ওই আবাসন সংস্থাটি। গত সোমবার ওই সংস্থার কয়েক জন কর্তা সুদীপের বাড়ি যান। সেখানে সুদীপের বাবা সন্ন্যাসীবাবুকে ছেলের অপূর্ণ ইচ্ছাপূরণ তাঁরা করবেন বলে জানান। সন্ন্যাসীবাবু সংস্থার প্রস্তাবে রাজি হয়ে লিখিত অনুমতি দেন এবং আবাসন সংস্থার তরফে তাঁকেও লিখিত ভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে।
আবাসন সংস্থার চিফ জেনারেল ম্যানেজার ইন্দ্রজিৎ দে বুধবার দুর্গাপুরে জানান, বাড়িটি সম্পূর্ণ করতে যত অর্থের দরকার, তা সংস্থার ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল’ (সিএসআর) থেকে দেওয়া হবে। বাড়ির পাশেই সুদীপের একটি মূর্তিও তৈরি করতে চান তাঁরা। ইন্দ্রজিৎবাবু বলেন, ‘‘দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া জওয়ানের স্মৃতির প্রতি আমরা আমাদের শ্রদ্ধা জানাই। সন্ন্যাসীবাবু যেমন ভাবে বাড়িটি তৈরি করতে বলবেন, আমরা তাইই করব।’’ সংস্থার দাবি, সব মিলিয়ে আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা খরচ হবে।
সংস্থার এই উদ্যোগের কথা জানার পরে সুদীপের বাবা, বছর পঞ্চান্নর সন্ন্যাসীবাবু ও তাঁর স্ত্রী মমতাদেবী বলেন, ‘‘ছেলে চেয়েছিল, দোতলা পাকা বাড়ি তৈরি করতে। সেই কাজও শুরু করে। এখন যদি বাড়িটা তৈরি হয়, তা হলে ছেলের স্মৃতির প্রতিই সম্মান জানানো হবে।’’