প্রতীকী চিত্র।
গভীর নলকূপের পাম্প অপারেটর এবং তার পরিচালন কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই পাম্পঘরে অপারেটরকে ঘণ্টা তিনেক আটকেও রাখেন তাঁরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। কালনা ২ ব্লকের আনুখাল পঞ্চায়েতের সাধপুকুর এবং রুকাশপুর গ্রামের বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং কালনা থানায় অভিযোগও করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বছর পাঁচেক আগে রুকাশপুর মৌজার ওই গভীর নলকূপটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি তৈরি হয়। আগের হিসেব মিলিয়ে পাম্প অপারেটর প্রণব দাসের হাতে সে সময় নগদ ৫২ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু নতুন কমিটির কাছে সে টাকার হিসাব নেই। এমনকী, জলকর বাবদ চাষিদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও তাঁদের দাবি।
চাষিরা জানান, আমন এবং বোরো মরসুমের জন্য ২০১৬ সালের আসমত শেখের কাছ থেকে মোট ৬,২৪৮ টাকা নেওয়া হয়েছিল। অথচ সরকারি তহবিলে জমা দেওয়া হয় ২,৬৬৯ টাকা। চাষিদের দাবি, কারও কাছে ২০ শতক জমির জলকর নেওয়া হয়েছে ৩০০ টাকা, কারও কাছে ৬০০ টাকা, আবার কারও কাছে বারশো টাকাও নেওয়া হয়েছে। তারপরেও সমস্ত সুবিধে মিলছে না বলে চাষিদের দাবি। তাঁরা জানান, সবে মাঠে ধানের বীজ ফেলা হয়েছে। তার মধ্যেই দিন সাতেক আগে নষ্ট হয়ে গিয়েছে গভীর নলকূপটির ট্রান্সফর্মার। নতুন ট্রান্সফর্মার আনতে কমিটি কোনও উদ্যোগ করেনি বলেও তাঁদের দাবি। কমিটির পাঁচ প্রতিনিধি এবং অপারেটর প্রণববাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে দুই গ্রামের শ’খানেকেরও বেশি বাসিন্দা পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। এলাকার চাষি পিয়ার আলি শেখ, আসমত শেখরা বলেন, বারবার বলার পরেও কমিটি হিসেব দিচ্ছে না।
এর মধ্যেই শনিবার বিকেলে পাম্প অপারেটর এলাকায় গেলে স্থানীয় মানুষ তাঁর কাছে হিসাব চান। দিতে না চাওয়ায় তাঁকে ঘরে আটকে রেখে শুরু হয় বিক্ষোভ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই পাম্প অপারেটরের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি। কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।