জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থা

বালি পাচার রুখতে ব্লকে যৌথ কমিটি

২৯ নভেম্বর দুই বর্ধমানের আধিকারিকদের নিয়ে দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে বালি পাচার বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪০
Share:

ঘাটের অনুমোদন নেই। তবু বালি তোলা হয় বলে অভিযোগ। রয়েছে গাড়ি চলাচলের চিহ্নও। কেতুগ্রামের নবগ্রামে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

এ বার ব্লক স্তরেও ‘যৌথ কমিটি’ গঠন করে বালি খাদান পরিদর্শন থেকে বালির গাড়ি পরীক্ষা করার কথা ভাবছে জেলা প্রশাসন। বিষয়টি চূড়ান্ত করতে আজ, বুধবার পুলিশ, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রশাসনের কর্তারা। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘জেলা স্তরে পুলিশ, ভূমি দফতরের সঙ্গে যৌথ কমিটি রয়েছে। এ বার ব্লক স্তরেও একটি কমিটি গঠন করা হবে।’’ ওই বৈঠকে মহকুমা প্রশাসনের কর্তাদেরও বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

২৯ নভেম্বর দুই বর্ধমানের আধিকারিকদের নিয়ে দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে বালি পাচার বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ওই বৈঠকেই মুখ্যসচিব মলয় দে পরামর্শ দেন, ‘‘রাস্তায় আটকানো মুশকিল। তাই গোড়ায় আটকাতে হবে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই সভার পরেই বেআইনি বালি কারবার বন্ধে আরও কড়া ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা হয়। সেই বার্তা ব্লক স্তরে পৌঁছে দিতে চাইছেন জেলার পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। বুধবারের বৈঠকে ওসি-আইসি, বিডিও-রা ছাড়াও ব্লক এবং পঞ্চায়েত স্তরের কর্মী-আধিকারিকেরা থাকবেন।

পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের নেতৃত্বে পাঁচটি যৌথ কমিটি রয়েছে। মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত যৌথ অভিযানে নানা অনিয়মের জন্য ১০৭২টি বালির গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়। তা থেকে রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ২ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া শুধু নভেম্বরে জেলায় ৭৪৩টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে প্রায় এক কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ভুয়ো চালান দিয়ে বালি নিয়ে যাওয়া বা বালি চুরি করে চম্পট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে ১৫৮ জন। মোট ৯৭টি অভিযোগে ১৬৮টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, খণ্ডঘোষে বেআইনি বালি খাদান বন্ধ করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ওই সব বেআইনি ঘাটের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে ভূমি দফতর।

Advertisement

জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ক্রমাগত অভিযান চালাচ্ছি। যৌথ অভিযানের পাশাপাশি পুলিশ নিজেও অভিযান চালাবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ৪২৭টি বালি খাদানকে ই-নিলাম করে ইজারাদারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও কিছু খাদানের দীর্ঘমেয়াদি ইজারা রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোন মৌজার কোন দাগে ইজারাদার বালি কাটার বরাত পেয়েছে, তা প্রকাশ্যে টাঙিয়ে রাখা দরকার। বালি খাদান খুঁটি দিয়ে নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। তা না হলে পুলিশ বা যৌথ কমিটি কী ভাবে বুঝবে, কোন জায়গা থেকে বালি কাটা হচ্ছে?’’ এ সব বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা বৈঠকের পরে জানানো হবে বলে জানান জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শশীকুমার চৌধুরী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন