সিপিএমের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
বর্ষা নামতেই ফিরে এল পুরনো ছবি। এ বারও কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে গেল দুর্গাপুরের বহু এলাকা। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার পুরসভার ৩ নম্বর বরো অফিসে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। সোমবার রাতের বৃষ্টিতে কাঁকসার বেশ কিছু জায়গাতেও মাটির বাড়ি ধসে গিয়েছে। বৃষ্টির পরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল আসানসোলের কিছু এলাকাও। তবে পরে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
দুর্গাপুরে গত কয়েক বছর ধরেই টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকা। সমস্যা মেটাতে একশো দিনের প্রকল্পে বর্ষার আগে নর্দমা সাফাই করেছে পুরসভা। কিন্তু তার পরেও যে পরিস্থিতি পাল্টায়নি, সোমবার রাতে কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতেই তা বোঝা গিয়েছে। তামলা খালের জল উপচে ঢুকে পড়ে বেশ কিছু বাড়িতে। জল জমে কাদা রোড, ওয়ারিয়া, মেনগেট ইত্যাদি এলাকায়। ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু এলাকায় যান। দামোদরের পাড়ে অঙ্গদপুরের ডিএমসি পাড়ায় জল জমে। সগড়ভাঙার আরআইপি প্লটে বিভিন্ন কারখানা চত্বরে জল জমে। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের শরৎ পল্লি, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিবেদিতা পার্ক-সহ আরও কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া সুভাষপল্লিতেও জল জমে।
মঙ্গলবার পুরসভার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে ৩ নম্বর বরো কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। দলের নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘সোমবার বিকেলে রাজ্যের এক মন্ত্রী বলে গেলেন, দুর্গাপুর উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। সত্যিই দুর্গাপুর ভাসছে, মাত্র এক পশলা বৃষ্টিতে।’’ ডেপুটি মেয়র অমিতাভবাবু পাল্টা বলেন, ‘‘বাম আমলে অপরিকল্পিত নগরায়নের ফল ভোগ করছে শহর। আমরা নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজা। উদ্যোগী হয়েছি।’’
কাঁকসার গোপালপুর, বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় জল জমে যায়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকে প্রায় ৩০টি মাটির বাড়ি ধসে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতের তরফে। ত্রাণসামগ্রীও দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস। সোমবার সন্ধে থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন ছিল। বিদ্যুৎ দফতরের পানাগড় কল সেন্টার সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়ের জন্য ১১ হাজার ভোল্টের লাইনে সমস্যা হয়। বিভিন্ন গ্রামেও গাছের ডাল ভেঙে তারের উপরে পড়েছিল।
টানা কয়েক ঘণ্টার বর্ষণে আসানসোল মহকুমারও কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আসানসোলের রেলপাড়ে কিছু বাড়িতেও জল ঢুকে যায় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। বারাবনির দোমহানি বাজার, স্কুলপাড়া, চুরুলিয়া রোড এলাকাতেও নর্দমার জল উপচে কিছু বাড়িতে ঢুকে যায়। বরাকরের রিভারসাইড এলাকাতেও বৃষ্টিতে ধসের আতঙ্ক তৈরি হয়।