এই অটোগুলিরই মিলবে বৈধতা। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত আসানসোল মহকুমার মধ্যে চলাচলকারী অটোকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সম্প্রতি জেলাশাসক সৌমিত্রমোহনের পৌরহিত্যে আসানসোলে আয়োজিত একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে মহকুমা প্রশাসনের সূত্রে জানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের জেরে খুশি সব পক্ষই।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের দায়ের করা একটি মামলার প্রেক্ষিতে আসানসোল পুরসভা এলাকায় অটো চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট। ওই নিষেধাজ্ঞার জেরে ২০০৬ সাল থেকে আসানসোলের পরিবহণ দফতর মহকুমার কোথাও অটো চলাচলের অনুমতি দেয়নি। কিন্তু তারপরেও ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়া থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এনে মহকুমার সর্বত্রই কোনও রুট না মেনে চলাচল করে অটোগুলি। এর জেরে ব্যবসায় ক্ষতির কথা বলে অটোচালকদের সঙ্গে প্রায়শই সংঘাত বেঁধেছে মিনিবাস মালিকদের। অবৈধ অটো চলাচল বন্ধের দাবিতে হাতাহাতি, ধর্মঘটের মতো ঘটনাও ঘটেছে। বহুবার বৈঠক ডেকেও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি।
আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, ‘‘অটোচালক ইউনিয়ন, মিনিবাস মালিকদের নিয়ে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকেই সমাধান সূত্র মিলেছে।’’ অমিতাভবাবু জানান, গোটা মহকুমা জুড়ে প্রায় ৮০টি রুটে মিনিবাস চলে না। ওই রুটগুলিতেই অটো চলবে। মিনিবাস মালিকদের তরফে মহকুমা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়নি। তবে সেইসঙ্গে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, কোনওভাবেই যেন মিনিবাস রুটে অটো চলাচল না করে। প্রশাসনের এই নির্দেশ মেনে নিয়েছেন অটো চালকেরা। মহকুমার ৮০টি রুটে চলাচলের জন্য প্রায় ১৫০০ অটোকে বৈধতা দেওয়া হবে বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। প্রায় ৩০০ অটোকে মহকুমার বিভিন্ন রেল স্টেশনে রাখা হবে। ওই অটোগুলি রিজার্ভ করে সাধারণ রেল যাত্রীরা মহকুমার যে কোনও প্রান্তে যেতে পারবেন।
অমিতাভবাবুর দাবি, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের জেরে অটোচালক, সরকার, সাধারণ যাত্রী প্রত্যেকেই লাভবান হবেন। ঝাড়খণ্ড বা পুরুলিয়া থেকে করানো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলেও অটোগুলিকে ফের আসানসোলেও রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। এর জেরে সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে। অটোচালক বৈজু ভাণ্ডারী বলেন, ‘‘আমি পুরুলিয়া থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে অটো চালাতাম। আসানসোলেও রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেব। ফলে নির্বিঘ্নে যাত্রী পরিবহণের কাজ করতে পারবো।’’ মহকুমার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দারাও এই সিদ্ধান্তের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে বলে মনে করছেন। আসানসোলের ইসমাইলের বাসিন্দা বাসুদেব দাস বলেন, ‘‘এসবি গরাই রোডের উপর মহীশিলা-ইসমাইল রুটে অটো চলাচল হলে দীর্ঘ পথ হাঁটার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব।’’
অটোর বৈধকরণের ফলে যাত্রী নিরাপত্তাও বাড়বে প্রশাসনের আধিকারিকদের আশা। রেজিস্ট্রেশন করানোর ফলে প্রশাসনের কাছে অটোচালকদের পুরো জীবনপঞ্জি থাকবে। এর জেরে শহরের কোথাও যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটলে সহজেই সংশ্লিষ্ট অটোচালককে চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
মহকুমাশাসক জানান, শীঘ্রই অটোচালক ইউনিয়নের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে ভাড়া ঠিক করা হবে। ওই ভাড়ার তালিকা যাত্রীদের সুবিধার্থে প্রকাশ্যে ঝুলিয়েও দেওয়া হবে। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে খুশি অটোচালক ইউনিয়নের নেতারাও। মোটর ট্র্যান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘এই কৃতিত্ব একা আমাদের। অটোচালকদের সুদিন ফেরায় খুশি আমরা।’’ বর্ধমান জেলা সিটুর সহ-সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘আমরা অটোচালকদের বৈধকরণ আমরাও চেয়েছিলাম। সব ঠিকমতো চললেই ভাল।’’ মিনিবাস অ্যাসোসিয়েসনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘সবারই কর্মসংস্থান বজায় থাকুক। কেউই যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন।’’
আঁকা প্রতিযোগিতা। নির্মল গ্রাম শীর্ষক বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার আঁকা প্রতিযোগিতা আয়োজিত হল অন্ডালের খান্দরা উচ্চবিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গৌতম বন্দ্যোপাদ্যায় জানান, প্রতিযোগিতায় মোট ১০২ জন পড়ুয়া যোগ দেয়।