সারা দিনে প্রায় ছয় থেকে আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে, পড়ুয়াদের পড়াশোনা থেকে চাষের কাজকর্ম, সবেতেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। মাস কয়েক ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে এমন জেরবার অবস্থা বুদবুদের বাসিন্দাদের।
এলাকার বিভিন্ন জায়গায় চলছে চাষের কাজ। সে জন্য সাবমার্সিবল পাম্প চালিয়ে সেচের জল নিতে হচ্ছে। কিন্তু সেখানেই বিপত্তি। টানা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে কার্যত পাম্প চালানোয় যাচ্ছে না বুদবুদ, মানকর, মাড়োর বিস্তীর্ণ এলাকায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বারবার দরবার করেও লাভ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনভর বিদ্যুৎ সংযোগ থাকছে না এলাকায়। বাসিন্দারা জানান, কখনও দিনে তিন-চার বার করে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। একবার বিদ্যুৎ গেলে তা আর দু’-তিন ঘণ্টার কমে আসছে না। বাসিন্দারা জানান, মাস দু’য়েক ধরে টানা এ রকম বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে এলাকায়। অভিযোগ, সমস্যা সমাধানের জন্য বারবার বিদ্যুৎ দফতরের স্থানীয় কার্যালয়ে দরবার করা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।
বিদ্যুৎ না থাকায় চাষের কাজও ব্যহত হচ্ছে বলে জানান চাষিরা। মানকরের বাসিন্দা সর্বেশ্বর গরাই জানান, এ বার আমন চাষের মরসুমের শুরুতে তেমন বৃষ্টি পড়েনি। ফলে সাবমার্সিব্যাল পাম্প দিয়ে জল তুলেই আপাতত চাষ করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পাম্প চালিয়েও বিপত্তি! খানিকটা সময় পাম্প চললেও যখন তখন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় সেচের জন্য পর্যাপ্ত জল মিলছে না। আখেরে চাষের ক্ষতি হচ্ছে।’’
বাসিন্দারা জানান, এই পুরো এলাকায় ১০টিরও বেশি হাইস্কুল, ডিগ্রি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিএড কলেজ রয়েছে। বিভিন্ন স্কুলে এখন ইউনিট টেস্ট চলছে। পড়ুয়ারা জানান, মাঝেসাঝেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সমস্যা হচ্ছে। বুদবুদের বাসিন্দা মহম্মদ হাকিম বলেন, ‘‘বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। কিন্তু মেয়েকে পড়াশোনা করতে হচ্ছে লণ্ঠনের আলোয়। এলাকার সব ছাত্রছাত্রীকেই এই সমস্যা পোহাতে হয়।’’ শুধু পড়ুয়া বা চাষিরা নন, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ বাসিন্দারাও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরও এই সময় বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হয়েছিল এলাকায়। তবে সে বার বারবার বিদ্যুৎ দফতরের হত্যে দিয়ে অবস্থার খানিকটা উন্নতি হয়েছিল। এ বার অবশ্য তেমনটা হয়নি।
কিন্তু বারবার একই সমস্যা কেন? বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বুদবুদ কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, দিন কয়েক ধরে মাঝেমধ্যেই ঝড় হচ্ছে। ফলে, বিদ্যুতের তারের উপরে ডালপালা পড়ে যাচ্ছে। বিভাগের এক আধিকারিক জানান, অনেক সময়েই শর্ট সার্কিট হচ্ছে। তার জেরেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে এই সব এলাকাগুলিতে। তবে তাঁদের আশ্বাস, সমস্যা সামাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।