এখানেই হয়েছে ডাকাতি। নিজস্ব চিত্র
রক্ষীদের মারধর করে ডাকাতির ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুরের রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি ঢালাই কারখানার (ফাউন্ড্রি) ঘটনা।
পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, উৎসবের মরসুম হওয়ায় কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল। ওই কারখানায় মূলত ম্যানহোলের লোহার ঢাকনা তৈরি করা হয়। তবে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও কারখানায় বহু জিনিসপত্র মজুত রাখা ছিল।
কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তিন জন রক্ষী। তাঁদেরই এক জন উমাপদ সিংহ জানান, রাত তখন প্রায় সাড়ে ১১টা। তিনি ও সজল রুইদাস নামে অন্য এক রক্ষী কারখানার বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছিলেন। গৌতম বাউরি নামে অন্য আরও এক রক্ষী কারখানার গেটের সামনে ছিলেন। উমাপদবাবু জানান, পাঁচিল টপকে কয়েক জন কারখানায় ঢোকে। তবে কারখানার পাঁচিলের কাছে ছোট জঙ্গল থাকায় উমাপদবাবুরা প্রথমে ওই ডাকাতদলকে দেখতে পাননি।
কিন্তু উমাপদবাবু ও সজলবাবু পাঁচিলের কাছাকাছি যেতেই ওই দলটি তাঁদের ঘিরে ধরে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েক জন তাঁদের চোখে টর্চের আলো ফেলে। তাই তাঁদের পক্ষে প্রাথমিক ভাবে বোঝা সম্ভব হয়নি কত জন ডাকাত ছিল। তার পরেই শুরু হয়ে যায় মারধর। প্রত্যেকের হাতেই ভোজালি, রড ছিল বলে ওই রক্ষীরা জানান। কোনও রকমে পালিয়ে যান সজলবাবু।
এর পরে কয়েক জন ঘিরে থাকে উমাপদবাবুকে। অন্য কয়েক জন পাঁচিলের অদূরেই চার দিক খোলা ছাউনি দেওয়া চত্বর থেকে নানা জিনিসপত্র লুটপাট করতে শুরু করে। তার পরে হাতে হাতে পাঁচিলের ওপারে চালান করে দেওয়া হয় ওই সমস্ত জিনিসপত্রগুলি। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে এই লুটপাট চলে।
অন্য রক্ষী সজলবাবু জানান, তিনি কোনও রকমে পালিয়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জায়গায় পৌঁছন। সেখান থেকে ফোনে গৌতমবাবুকে এবং কোকআভেন থানায় ফোন করেন তিনি। খানিক বাদে দু’টি ভ্যানে করে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে তার আগেই প্রায় জনা ২৫-এর ওই ডাকাতদলটি ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়।
কেশরী নন্দন নামে কারখানার এক আধিকারিক জানান, এ পর্যন্ত কত টাকার সামগ্রী লুট হয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে বোঝা যায়নি। তবে ঘটনার তদন্ত চেয়ে কোকআভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানায় সিসিটিভি থাকলেও যেখানে লুটপাট চলে, সেখানে তা ছিল না। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদীর বক্তব্য, ‘‘ডাকাতির বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত অপরাধীরা ধরা পড়বে।’’