—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে দারিয়াপুরে। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন স্থানীয়দের একাংশ। দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াল পুলিশ। শেষে আটক করা হয়েছে বেশ কয়েক জন গ্রামবাসীকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম উৎপল কর্মকার। ৩৭ বছরের ওই যুবক বিবাহিত। দম্পতির দুই সন্তান। উৎপলের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পাড়ারই যুবক সুরেশ কর্মকারের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল গ্রামে। উৎপলের পরিবারের দাবি, বৌমা পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। এ নিয়ে অশান্তি শুরু হয় বাড়িতে। জানা যাচ্ছে, স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানাজানি হওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হন উৎপল। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, পুলিশ ‘অদ্ভুত নিদান’ দেয় উৎপলকে। তারা বলে, স্ত্রী যখন প্রেম সুরেশের সঙ্গেই করছেন, তখন তাঁকেই বিয়ে করুন। তাতেই মানসিক চাপে পড়ে যান উৎপল। রাতেই সুরেশের সঙ্গে স্ত্রীর সিঁদুরদান হয়ে যায়। তার পরেই বাড়ি ফিরে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক।
প্রতিবেশী রাখী তুড়ি, সময় তুড়িরা বলেন, ‘‘সোমবার রাতে সুরেশের সঙ্গে উৎপলের স্ত্রীর সিঁদুরদান হয়। তার পরেই গলায় দড়ি দিয়ে বাড়িতে আত্মঘাতী হয়েছে উৎপল।’’ তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ বিয়ের কথা বলার পরেই দুই বিবাহিত যুবক এবং যুবতী আবার বিয়ে করেছেন। কী ভাবে পুলিশ এমন নিদান দিতে পারে, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। পুলিশ যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। সুতরাং কে কাকে বিয়ে করবে, ওটা তাদের বিষয়। পুলিশ ঠিক করতে পারে না।
উৎপলের মৃত্যুর খবর পেয়ে মঙ্গলবার তাঁর বাড়িতে যায় গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। কিন্তু দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা। গ্রামবাসীরা আটকে রাখেন সুরেশ এবং উৎপলের স্ত্রীকে। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজনা চরমে ওঠে। পুলিশ ও গ্রামবাসীদের ধস্তাধস্তি হয়। সুরেশ এবং উৎপলের স্ত্রী, দু’জনেই জখম হয়েছেন। পরে সুরেশকে পুলিশ গুসকরা ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। উৎপলের স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় গুসকরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
এই ঘটনায় পুলিশ কয়েক জনকে আটক করেছে। পাশাপাশি মৃতদেহ ময়নাতদন্তের বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।