রিপোর্ট তলব জেলাশাসকের

অনুমোদন ছাড়াই স্কুলে ছাত্র ভর্তির অভিযোগ

ফ্লেক্স, টেলিভিশনে সর্বত্র বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে নতুন স্কুলের নামে। সেই মতো স্কুলে ভর্তিও হয়ে গিয়েছে প্রায় আটশো পড়ুয়া। কয়েকদিন বাদেই শুরু হওয়ার কথা পঠনপাঠন। কিন্তু আচমকা বিনা মেঘে বজ্রপাত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪০
Share:

ফ্লেক্স, টেলিভিশনে সর্বত্র বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে নতুন স্কুলের নামে। সেই মতো স্কুলে ভর্তিও হয়ে গিয়েছে প্রায় আটশো পড়ুয়া। কয়েকদিন বাদেই শুরু হওয়ার কথা পঠনপাঠন। কিন্তু আচমকা বিনা মেঘে বজ্রপাত। জানা গিয়েছে, স্কুল শুরুর জন্য জরুরি কেন্দ্রীয় বোর্ডের ছাড়পত্রটাই মেলেনি এখনও। খবর চাউর হতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। বিধাননগরে সদ্য প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি সম্পর্কে রিপোর্ট দেওয়ারও নির্দেশ এসেছে মহকুমা প্রশাসনের কাছে। মঙ্গলবার বিজেপির তরফে মহকুমা প্রশাসনের দফতরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।

Advertisement

দক্ষিণ ভারতের একটি সংস্থার অধীনে স্কুলটি তৈরি হয়েছে বলে খবর। মাস তিনেক আগে থেকে শুরু হয় বিজ্ঞাপন দেওয়ার কাজও। এরপরেই স্কুলে ভর্তি হওয়ার হিড়িক শুরু হয়ে যায়। ডে-বোর্ডিংয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে স্কুলটিতে। শহরের বিভিন্ন স্কুল থেকে পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা এই স্কুলে যোগ দিয়েছেন বলে খবর। আপাতত বিধাননগরের একটি ম্যানেজমেন্ট কলেজের ভিতরে অস্থায়ী ভাবে কাজ শুরু করেছে স্কুলটি।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় আটশো পড়ুয়া ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়ে গিয়েছে। পড়ুয়াদের স্কুলের পোশাক, বইপত্র দেওয়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। ২২ এপ্রিল থেকে পঠন-পাঠন শুরু হওয়ার কথা। একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা শুরু হবে ২৫ এপ্রিল থেকে।

Advertisement

কিন্তু এরপরেই গোল বাধে। জানা যায় সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশনের (সিবিএসই) অনুমোদন মেলেনি বলে অভিযোগ। এক অভিভাবকের দাবি, সিবিএসই-র ওয়েবসাইটে দুর্গাপুরে মোট ১২টি স্কুলের অনুমোদন রয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে এই স্কুলটি নেই। সিবিএসসি-র ভুবনেশ্বর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধাননগরের এই স্কুলটির এখনও পর্যন্ত কোনও অনুমোদন নেই।

এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকেরা পড়েছেন আতান্তরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবকেরা জানান, চড়া ভর্তি ফি দিয়ে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করতে হয়েছে। পুরনো স্কুলও আর ফেরত নেবে না।

শুধু অনুমোদন নেই তা নয়, ওই স্কুলের বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, চুক্তি অনুযায়ী টাকা দেওয়া হবে না বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষাকর্মী, নৈশপ্রহরী-সহ বিভিন্ন পদে স্থানীয়দের নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাস। পরিচিত বেশ কয়েকজনকে ওই স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য পরামর্শও দিয়েছিলেন উমাপদবাবু। এখন তাঁর কথায়, ‘‘তখন বুঝতে পারিনি। এখন সত্যি সামনে চলে আসায় সমস্যায় পড়ে গিয়েছে।’’ ডিপিএলের আইএনটিইউসি’র পক্ষ থেকেও সম্প্রতি স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘বিনা অনুমোদনে পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া বেআইনি কাজ। মহকুমাশাসকের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। গাফিলতি ধরা পড়লে প্রয়োজনে স্কুলটিকে ‘সিল’ করে দেওয়া হবে।’’

স্কুলের ডিরেক্টর মাধব আচারির সঙ্গে বারবার যোগাযগোরে চেষ্টা করা হলেও ফোন কেটে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন